ফাইল চিত্র।
দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে ভেঙে দেওয়া হয়েছে সমস্ত ব্লক কমিটি। তার পরে, মাস ছয়েক পেরিয়ে গেলেও, নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই দ্রুত সভাপতি নির্বাচন করে ব্লক কমিটিগঠনের দাবি উঠছে তৃণমূলের অন্দরে। বিভিন্ন ব্লকের তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করেছে বিরোধীরা। কিন্তু ব্লক কমিটি না থাকায় পুরোদমে তা শুরু করা যাচ্ছে না, অভিযোগ শাসক দলের অনেকেরই।
পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি নির্বাচন ও ব্লক কমিটি গঠনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব। আশা করছি, দ্রুত সে ঘোষণা করা হবে।’’ তৃণমূল সূত্রের দাবি, ২১ জুলাইয়ের পরে, রাজ্য নেতৃত্ব ব্লক কমিটি গঠনের বিষয়ে ঘোষণা করতে পারেন। এই পরিস্থিতিতে, কারা ব্লক সভাপতির দায়িত্ব পাবেন, তা নিয়েও দলের বিভিন্ন মহলে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। দল সূত্রের খবর, ব্লক সভাপতিদের নামের প্রাথমিক তালিকা জেলা থেকে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। সে তালিকা অনুযায়ী, বেশ কিছু ব্লকে সভাপতি বদলের সম্ভবনা রয়েছে।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, ব্লক সভাপতি নির্বাচনে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করাহয়েছে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শান্তিরাম মাহাতো, সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়দের মতো জেলার প্রথম সারির নেতাদের মতামতকে। এ ছাড়া, বিধায়ক রাজীবলোচন সোরেন, সুশান্ত মাহাতো ও মন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডুর এলাকায়কারা ব্লকগুলিতে দলের দায়িত্ব পাবেন, সে বিষয়ে তাঁদের মতামতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের এক জেলা নেতার কথায়, ‘‘দলের অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা অনুযায়ী, যাঁদের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রয়েছে, তাঁদের নামই তালিকায়ঠাঁই পেয়েছে।’’
পর পর তিনটি নির্বাচন— পঞ্চায়েত, লোকসভা ও বিধানসভায় পুরুলিয়ায় তৃণমূলের ফল আশানুরূপ হয়নি। আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে দলের হারানো জমি পুনরুদ্ধারে ঢিলেমি দিতে রাজি নন দলেরজেলা নেতৃত্ব। তৃণমূল সূত্রের দাবি, তার অঙ্গ হিসেবে ব্লক সভাপতি নির্বাচনে স্বচ্ছভাবমূর্তি ও দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিতিকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কিছু ব্লকে পুরনো সভাপতিরাই ফের দায়িত্ব পেতে পারেন। সভাপতি নির্বাচনের জন্য একটি সংস্থা সমীক্ষা চালিয়েছে বলেও শাসক দল সূত্রের খবর। জেলা নেতাদের একাংশের দাবি, ওই সংস্থার সদস্যেরা জেলার কুড়িটি ব্লকেই প্রস্তাবিত সভাপতিদের নাম নিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন। তাতে দেখা হয়েছে, যাঁর নাম প্রস্তাব করা হয়েছে তাঁর জনসমর্থন কেমন, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আছে কি না, নিচুতলার কর্মীদের কাছে কতটা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে, দলের সব ‘গোষ্ঠীর’ নেতা-কর্মীদের নিয়ে চলতে পারেন কি না— এ সব বিষয়গুলি।
তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, ওই সংস্থাসমীক্ষার রিপোর্ট রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছে। দলের এক জেলা নেতার দাবি, ‘‘জেলা থেকে পাঠানো তালিকা ও সংস্থার রিপোর্ট, দু’টি খতিয়ে দেখেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্য নেতৃত্ব।’’