মহম্মদবাজারে চলছে সভা। নিজস্ব চিত্র
যে অঞ্চল সভাপতির জন্য গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে খারাপ ফল হয়েছিল, তিনি অঞ্চল সভাপতির দায়িত্ব থাকলে ফের হারতে হবে। জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সামনে অঞ্চল সভাপতি-র বিরুদ্ধে এ ভাবেই সরব হলেন মহম্মদবাজারের রামপুর পঞ্চায়েত এলাকার এক বুথ সভাপতি। অভিযোগকে উড়িয়ে না দিয়ে সমাধানের একটি ‘মধ্যবর্তী’ পন্থা নিলেন অনুব্রত। ওই নেতা, রাকেশ মণ্ডলকে অঞ্চলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ব্লকের একটি ‘আলঙ্কারিক’ পদে উন্নীত করা হয়েছে।
রবিবার মহম্মদবাজারের মর কাঁইজুলি হেমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ছ’টি পঞ্চায়েতের বুথ ভিত্তিক কর্মী সম্মেলন ডেকেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। সেই তালিকায় ছিরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতটিও। প্রসঙ্গত, গোটা জেলায় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ভাল করলেও শাসক দল যথেষ্ট বেকায়দায় ছিল মহম্মদবাজারে। গণপুর পঞ্চায়েত হাতছাড়া হয়েছিল। এ ছাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত আসন ও পঞ্চায়েত সমিতির আসন দখল করেছিল বিজেপি। রামপুর নামের ৬ আসন বিশিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতটির তিনটি করে আসন পায় বিজেপি ও তৃণমূল। ফলে টাই হয় ওই পঞ্চায়েতে।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, শাসক দলের এমন অবস্থার পিছনে স্থানীয় নেতাদের একাংশের দুর্নীতি, এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগযোগ না রাখা, ঔদ্ধত্যের মতো অভিযোগ ছিল। সেই নেতাদের তালিকায় ছিলেন রাকেশও। তাঁকে ফল বের হওয়ার পরই বহিষ্কার করা হয় দলে থেকে। পরে অবশ্য তাঁকে ফিরিয়ে নেয় দল। প্রায় দেড় বছরের মাথায় টসে ওই পঞ্চায়েতে তৃণমূল ক্ষমতায় আসে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলে ফেরার পর ফের এলাকায় রাজনৈতিক কর্তৃত্ব কায়েম করতে থাকেন ওই নেতা।
ব্লক সভাপতি তাপস সিংহ দাবি করেছেন রাকেশ অঞ্চল সভাপতিই ছিলেন। তা নিয়েই জেলা সভাপতির কাছে সরব হন, রামপুর অঞ্চলের ২৪১ নম্বর বুথের বুথ সভাপতি ফাইজুল রহমান। তিনি দাবি করেন, রাকেশকে অঞ্চলের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে না নিলে এ বারও ফল খারাপ হবে। এ কথা শোবার পর অনুব্রত রাকেশকে ব্লকের সম্পাদকের দায়িত্বে রাখার নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি ওই অঞ্চলে রাকেশ যেন আর কোনও বিষয়ে একা মাথা না ঘামান সেটা দেখতে বলেন।
তবে ব্লকে থাকলেও রাজেশের ‘খবরদারি’ কমবে কি না তা নিয়ে সংশয় যায়নি এলাকার অনেক তৃণমূল কর্মীরই। রাকেশ নিজে অবশ্য দাবি করছেন, তিনি অঞ্চল সভাপতি ছিলেন না। তবে দলের হয়ে এলাকায় কাজ করছিলেন। তার দাবি, ‘‘দল যে দায়িত্ব দেবে সেটাই মাথা পেতে নেব। বুথ সভাপতির দায়িত্ব হলেও ক্ষতি নেই।’’
রামপুর পঞ্চায়েতে আরও একটি অভিযোগ উঠে এসেছে। তা হল কাজ করেও ১০০দিনের কাজে টাকা সময়ে না পাওয়ার অভিযোগ। সেই সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন শীর্ষ নেতৃত্ব।