Death

সেপটিক ট্যাঙ্কের কাজে নেমে মৃত ৩

ওই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না সমীরের স্ত্রী নিবেদিতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ময়ূরেশ্বর শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০১:৪২
Share:

প্রতীকী চিত্র। 

সেপটিক ট্যাঙ্কে কাজ করতে নেমে মৃত্য়ু হল তিন যুবকের। পুলিশ জানায়, মৃতদের নাম সমীর কোনাই (৩২), মধুসূদন কোনাই ( ৩৫) এবং আশিস বাগদি ( ২২)। প্রথম দু’জনের বাড়ি ময়ূরেশ্বর থানার উলকুন্ডা গ্রামে। তাঁরা পেশায় রাজমিস্ত্রি। আশিসের বাড়ি স্থানীয় চন্দ্রপলশা গ্রামে। তিনি রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ করতেন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য তিন জনের দেহ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

Advertisement

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে উলকুন্ডা গ্রামের বামুনপাড়ার জয়ন্ত রায়ের বাড়িতে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন পনেরো ধরে ওই বাড়িতে ঠিকায় শৌচাগার নির্মাণের কাজ করছিলেন সমীর, মধুসূদন ও আশিস। এ দিন সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে নেমে সেন্টারিং-এর পাটা ছাড়াচ্ছিলেন। সেই সময়ই তাঁদের মৃত্যু হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অন্ধকারে কাজ করার জন্য চেম্বারে বৈদ্যুতিক বাতি জ্বালানো হয়েছিল। তা থেকেই কোনও ভাবে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে তিন জনই মারা যান। এ দিন সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, সেপটিক ট্যাঙ্কটি দড়ি এবং টিন দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। জয়ন্তবাবুর দেখা মেলেনি। তাঁর স্ত্রী ইতুদেবীর দাবি, বৈদ্যুতিক বাতি ব্যবহার করা হয়নি। ব্যাটারি চালিত ইমার্জেন্সি লাইট দিয়ে কাজ হচ্ছিল। তা হলে মৃত্য়ু কী ভাবে? তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা একে একে সেপটিক ট্যাঙ্কে নেমে আর উঠতে পারেনি। কী কারণ বলতে পারব না। পরে গ্রামের লোকেরা এসে তাদের উদ্ধার করে।’’

ওই ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না সমীরের স্ত্রী নিবেদিতা। তাঁর দু’টি নাবালক সন্তান রয়েছে। সমীরের দাদা বিকাশ বাগদি বলেন, ‘‘দুপুরে খেয়ে বাড়ি থেকে গেল। সন্ধ্যায় শুনি ওই কাণ্ড। কী করে কী হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ মৃত মধুসূদনের মেয়ে নন্দিনী সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। ছেলে শীতল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তাঁর স্ত্রী মামনি কোনাই বলেন, ‘‘ইলেকট্রিক লাইন নিয়ে কাজ করতে গিয়েই ওদের মৃত্যু হয়েছে। এখন ছেলেমেয়েদের কী করে মানুষ করব, কী ভাবে সংসার চালাব জানি না।’’

Advertisement

মাস তিনেক আগেই বিয়ে হয়েছে আশিসের। দুঃসংবাদ শোনার পর থেকেই তাঁর স্ত্রী কোয়েল ঘন ঘন মুর্চ্ছা যাচ্ছেন। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছেন বাবা উত্তম বাগদিও। প্রতিবেশীরা বললেন, ওদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement