baby

Death: কোটশিলায় বাড়িতে আগুন, মৃত্যু শিশুর

আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল তেরো মাসের এক শিশুর। ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন জন। সোমবার রাতে পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার বেগুনকোদরের মাঝবাজার এলাকার ঘটনা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোটশিলা শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২২ ০৬:২৯
Share:

পোড়া ঘর। নিজস্ব চিত্র।

আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল তেরো মাসের এক শিশুর। ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন জন। সোমবার রাতে পুরুলিয়ার কোটশিলা থানার বেগুনকোদরের মাঝবাজার এলাকার ঘটনা। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মৃত শিশুর নাম তনুজা লাহা। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করছে দমকল। আহতেরা রাঁচীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

মাঝবাজারের বাসিন্দারা জানান, সোমবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। সন্ধ্যার পরে, গরম থেকে কিছুটা স্বস্তি মেলায় ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে গল্পগুজবে মেতেছিলেন কয়েক জন। তখনই দেখা যায়, মাঝবাজারের বাসিন্দা নিত্যানন্দ লাহার বাড়িতে আগুন লেগেছে। ছুটে যান প্রতিবেশীরা। শুরু হয় আগুন নেভানোর কাজ। কিন্তু আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে, বাড়ির কাছে ঘেঁষতে পারছিলেন না কেউ। ওই সময় নিত্যানন্দর ঘরে ছিলেন তাঁর মেয়ে তনুজা, দাদা গৌরাঙ্গ, বৌদি মানা এবং এক ভাইপো।

তাঁদের পক্ষে আগুন নেভানো সম্ভব নয় বুঝে স্থানীয়েরা খবর দেন ঝালদা দমকল কেন্দ্রে। হঠাৎ কয়েক জনের নজরে আসে, যে ঘরে আগুন লেগেছে, সে ঘরের জানলা দিয়ে হাত নেড়ে ডাকছেন কোনও এক জন। প্রতিবেশীরা বুঝতে পারেন, ঘরে আটকে পড়েছেন কেউ। ঘরের দরজায় আগুন ধরে যাওয়ায় দেওয়াল কেটে কার্যত সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয় তিন জনকে। তখনও জানা যায়নি, ঘরে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে তনুজা। এরই মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছন ঝালদা দমকলকেন্দ্রের কর্মীরা। যায় পুলিশ। আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন তাঁরা।

Advertisement

ঘটনার সময় বাড়িতে ছিলেন না নিত্যানন্দ। বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে এসে মেয়ের খোঁজ শুরু করেন। তখনই জানা যায়, ঘরে আটকে রয়েছে তনুজা। তাকে উদ্ধার করতে ঘরে ঢোকেন দমকলকর্মীরা। দেখা যায়, এক কোণে পড়ে রয়েছে একরত্তির দেহ। এক প্রত্যক্ষদর্শীর কথায়, ‘‘সে দৃশ্য দেখার মতো নয়।’’ উদ্ধারকারী গ্রামবাসীর মধ্যে দীপক নাগ বলেন, ‘‘প্রথমে আমরা ঘরের ভিতরে ঢুকে শিশুটিকে খুঁজে পাইনি। পরে, দমকলের ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। পুলিশ এবং দমকলকর্মীরা বাচ্চাটিকে বাইরে আনেন। কোটশিলা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।’’

মঙ্গলবার তনুজার দেহের ময়না-তদন্ত হয় পুরুলিয়ার মর্গে। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। দমকলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কী কারণে আগুন লেগেছিল, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে।’’ স্থানীয়দের একাংশের আশঙ্কা, ঘরে মজুত ছিল দাহ্য পদার্থ। তা থেকেই আগুন লেগেছিল।

এ দিন বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্না থামছে না নিত্যানন্দর। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা স্বামী-স্ত্রী ওই সময় ঘরে ছিলাম না। বাড়ির কিছু দূরে আমাদের দোকান। সেখানেই ছিলাম আমরা। মেয়েটা ছিল তার জেঠু-জেঠিমার কাছে। কী করে এমন ঘটনা ঘটল বুঝতে পারছি না। একরত্তি মেয়েটা অকালে চলে গেল!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement