শিক্ষক আসার অপেক্ষায় ছাত্ররা। — নিজস্ব চিত্র।
স্কুল রয়েছে। সেখানে পড়ুয়াও রয়েছে। নেই শুধু শিক্ষক। তাই হাপিত্যেশ করে বসে থাকে পড়ুয়ারা। এই ছবি পুরুলিয়া-১ ব্লকের তেলেডি জুনিয়র হাই স্কুলের।দীর্ঘ দিন ধরে স্কুলটি বন্ধ হয়ে রয়েছে, কারণ শিক্ষক আসেন না। পড়ুয়ারা শিক্ষকের পথ চেয়ে তীর্থের কাকের মতো বসে আছে। উদ্দেশ্য, শিক্ষক এলে তারা ট্রান্সফার সার্টিফিকেট নিয়ে অন্য স্কুলে চলে যাবে। কারণ তারা পড়াশোনা করতে চায়। তবে স্কুলে ওই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক চন্দন দাস কেন বিদ্যালয় আসছেন না তা জানা নেই প্রশাসনের।
ওই স্কুলে একজন অতিথি শিক্ষক রয়েছেন। তিনি ক’দিন এসেছিলেন। তার পরে তিনিও আসছেন না। যার ফলে স্কুলে কার্যত তালা ঝুলছে। স্কুলের অষ্টম শ্রেণির বজরং বলী গোপ, ষষ্ঠ শ্রেণীর শচীন গোপ বলে, ‘‘আজ পাঁচ-ছ মাস ধরে স্কুলে আসেন না শিক্ষক। তাই বাধ্য হয়ে আমরা বাড়িতে বসে রয়েছি। আমরা টিসি নিতে চাই অন্য স্কুলে ভর্তি হব।’’ সপ্তম শ্রেণির রাকেশ গোপ, ষষ্ঠ শ্রেণির রাখি গোপ বলে, ‘‘কেন স্কুল বন্ধ আমরা জানি না , তবে আমরা এখন বাড়িতেই থাকি।’’
অভিভাবক পরীক্ষিত গোপ বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েগুলো সব ভুলে বসে আছে। দীর্ঘ ছ’মাস হতে চলল শিক্ষক আসেননি স্কুলে। কেন আসেন না, তা-ও জানি না। আমরা টিসি চাই, যাতে ছেলেমেয়েদের অন্য জায়গায় ভর্তি করতে পারি।’’ তবে স্কুলটি সচল থাকলে তাঁরা তাঁদের ছেলে মেয়েদের এখানেই পড়াতেন বলেও জানান। স্কুলে প্রায় ৮০-৯০ জন পড়ুয়া রয়েছে বলে জানান স্থানীয় অভিভাবকেরা। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পুরুলিয়া জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) গৌতম চন্দ্র মাল বলেন, ‘‘বিষয়টি জানার পর ওই শিক্ষককে ডেকে পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু তিনি আসেননি। তার পর তাকে শো-কজ় করা হয়। কিন্তু তারও উত্তর দেননি। পরে ফের শোকজ করা হয়। তখনও উত্তর দেননি। এ বার আবর বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে রিপোর্ট নিয়ে বোর্ডকে বিস্তারিত জানান হবে।’’ শিক্ষকের বেতন বন্ধ করার চিন্তা ভাবনা চলছে বলেও জানান তিনি।