কনকনে শীত পড়তেই দোকানের বাইরে শীতবস্ত্রের অস্থায়ী দোকানে টুপি বিক্রি। বুধবার সিউড়ির মসজিদ মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।
বিগত এক সপ্তাহ ধরে কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে গোটা বীরভূম। দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছে ৭ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে। সকাল থেকে ঘন কুয়াশার
চাদরে ঢাকা চারপাশ। সঙ্গে বইছে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। বিশেষ কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না কেউই। সাধারণ মানুষ ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে গেলেও মুখে হাসি ফুটেছে বস্ত্র ব্যবসায়ীদের।
গত কয়েক বছর ধরে শীতবস্ত্রের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী ছিল। এ বছরও শীতের শুরুর দিকে শীতবস্ত্র বা কম্বলের বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। কিন্তু, গত কয়েক দিনে সেই সব ঘাটতি মিটে গিয়েছে। লাভের মুখ দেখেছেন ব্যবসায়ীরা। মজুত থাকা জামাকাপড় শেষ করে নতুন করে মালপত্র নিয়ে আশতে হয়েছে তাঁদের।
বুধবার সিউড়ির টিকাপাড়ার এক হোলসেল বস্ত্র ব্যবসায়ী ইমামউদ্দিন আনসারি কলকাতায় গিয়েছিলেন নতুন শীতবস্ত্র ও কম্বল কিনতে। সেখান থেকেই ফোনে বললেন, “ডিসেম্বর আর জানুয়ারির শুরুর দিকে শীতের যা পরিস্থিতি ছিল, তাতে মজুত থাকা মালপত্র বিক্রি হবে কিন না, তা নিয়েই সংশয়ে ছিলাম। যে পরিমাণ জিনিস কিনে এনেছিলাম, তা বিক্রি না হলে ক্ষতির মুখেই পড়তে হত আমাদের। গত কয়েক দিন জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ার পরে বিক্রি এক লাফে কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। সমস্ত মজুত থাকা জিনিসও শেষ।’’ তিনি জানান, ক্রেতাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে আবার নতুন করে শীতবস্ত্র ও কম্বল কিনতে হচ্ছে। ‘‘বেশ কয়েক বছর পর শীতের মরশুমে এতটা লাভের মুখ দেখলাম।”—বললেন ইমামউদ্দিন।
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কম্বলের বিক্রি বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। টুপি ও মাফলারের চাহিদাও যথেষ্ট। সিউড়ির এক খুচরো বস্ত্র বিক্রেতা শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “এ বছর শীতের জামাকাপড় বিক্রির আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলাম। অর্ধেকও বিক্রি হয়নি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। কিন্তু, শেষ পাঁচ দিনে সব ঘাটতি পূরণ হয়ে গিয়েছে। বেলায় তাপমাত্রা একটু বাড়তেই ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন দোকানে।” শ্যামল জানান, এ বছর শীতের শুরু থেকে জানুয়ারির ১০ তারিখ পর্যন্ত যা বিক্রি হয়েছিল, তার প্রায় সমপরিমাণ বিক্রি হয়েছে শেষ ছয় দিনে।
এ দিন দুপুরে সিউড়ির কোর্ট বাজার এলাকায় সোয়েটার কিনছিলেন নিউ ডাঙালপাড়ার তানিয়া প্রামাণিক৷ বললেন, “প্রতি বছরই ডিসেম্বরে কয়েকটি নতুন শীতবস্ত্র কিনি। কিন্তু, এ বার শীত সেভাবে না-পড়ায় কেনাকাটাও বিশেষ করা হয়নি। এই ঠান্ডায় অবশ্য সব হিসেব বদলে গিয়েছে৷ এখন নতুন সোয়াটার কিনতেই হল।”