প্রতীকী ছবি
পরীক্ষার ‘রেজিস্ট্রেশন’ অনলাইনে করে ফেলার নির্দেশিকা আগেই জারি করা হয়েছে। এ বার বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় স্নাতক স্তরের পরীক্ষার প্রস্তুতিও সেরে রাখতে উদ্যোগী হল। উপাচার্য দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পরীক্ষা কবে হবে তা নিয়ে আমরা নিশ্চিত নই। সরকারি নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত আমরা রুটিনও তৈরি করব না। তবে পরীক্ষার প্রস্তুতি এগিয়ে রাখতে চাই। তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনাও শুরু করেছি।”
এ দিকে, ‘লকডাউন’-এর মধ্যে পরীক্ষা বা পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন স্থগিত রাখার দাবি তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজগুলির পড়ুয়াদের একাংশ। জেলার বেশ কয়েকটি কলেজের পড়ুয়ারা ‘বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় স্টুডেন্ট ভয়েস’ নামে একটি সংগঠন তৈরি করেছেন। তাঁদের দাবি, সেটি অরাজনৈতিক। সম্প্রতি সংগঠনের তরফে এই দাবিগুলি নিয়ে বাঁকুড়ার জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়।
সংগঠনটির আহ্বায়ক তথা বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শুভদীপ দে বলেন, “লকডাউনে পরীক্ষা হলে, ভিন্ জেলার ছাত্রছাত্রীদের আসতে অসুবিধা হবে। রেড জ়োন থেকে যাঁরা আসবেন, তাঁদের কোয়রান্টিনে থাকার ব্যবস্থা নেই। এই সব সমস্যার জন্যই পরীক্ষা স্থগিত রাখার দাবি তুলেছি।”
কলেজের দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ষষ্ঠ সিমেস্টারের পরীক্ষা হওয়ার কথা জুলাই নাগাদ। প্রতিটি বিষয়ে ৫০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। তার মধ্যে চূড়ান্ত লিখিত পরীক্ষা ৪০ নম্বরের আর ১০ নম্বরের ‘ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট’। উপাচার্য জানান, ‘ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট’ জমা নেওয়া শুরু করেছে কলেজগুলি। এ ক্ষেত্রে কলেজে না গিয়ে ‘ইলেকট্রনিক মোড’ –এ পরীক্ষার্থীরা তা জমা করছেন। হোয়াটসঅ্যাপ, ইমেলে বা ডাকযোগে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে লেখা জমা করছেন।
বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, অনেক পরীক্ষার্থীর মোবাইল বা স্মার্ট ফোন না থাকায় তাঁরা ‘হোয়াটঅ্যাপ’ বা ইমেলে ‘ইন্টারন্যাল অ্যাসেসমেন্ট’ জমা করতে পারছেন না। তাঁদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থারও দাবি তোলা হচ্ছে। উপাচার্য বলেন, “ই-ক্লাস করতে গিয়ে দেখেছি, জেলার বেশির ভাগ পড়ুয়ার কাছেই স্মার্ট ফোন রয়েছে। যাঁদের নেই, তাঁরা অন্যের ফোন থেকেও পাঠাতে পারেন। তার পরেও জমা করতে না পারলে, বিকল্প ব্যবস্থা আমরা করব।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশ মেনে চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে অর্ধেক নম্বরের। ‘প্র্যাকটিক্যাল’ পরীক্ষার বদলে নেওয়া হবে মৌখিক পরীক্ষা। সে ক্ষেত্রে ফোন বা ‘ভিডিও কনফারেন্স’-এ পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে শিক্ষক মৌখিক পরীক্ষা নেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। ঠিক হয়েছে, পরবর্তী সিমেস্টারগুলিতে পড়ুয়াদের বিশেষ ভাবে ‘প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস’ করানো হবে।
উপাচার্য বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পরীক্ষার্থীরা নিজের নিজের কলেজেই লিখিত পরীক্ষা দেবেন। অর্ধেক নম্বর হওয়ায় খুব কম সময়ে পরীক্ষা শেষ হবে। কোনও বিষয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি হলে একই দিনে দফায় দফায় পরীক্ষা নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্নপত্রও আলাদা হবে।’’ কোনও ভাবেই পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাতে নিরাপদ দূরত্ব বিধি অমান্য না হয়, তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।