ছবি: সংগৃহীত
আসানসোলে দু’জনকে পিষে মারা দাঁতালের অবস্থান আপাতত ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া গোলকাটার জঙ্গলে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছে বন দফতর। ঘুম পাড়িয়ে ওই হাতিটিকে বুধবার ভোরে পুরুলিয়ার যমুনা বনাঞ্চলের লোটঝর্নার জঙ্গলে এনে ছাড়া হয়েছিল। তার পরে, সেটির উপরে নজর রেখেছেন হুলাপার্টির লোকজন। তাঁদের থেকে পাওয়া খবরে, আচ্ছন্ন ভাব কিছুটা থাকায় ধীরে চলছে হাতিটি। দ্রুত সেটি ঝাড়খণ্ডে ঢুকে পড়বে বলে আশা বনকর্তাদের।
বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘুমপাড়ানি গুলিতে আচ্ছন্ন করে বড় ট্রাকে চাপিয়ে হাতিটিকে আসানসোল থেকে নিয়ে আসা হচ্ছিল। ঠিক ছিল, বান্দোয়ানের ঠরকাদহ গ্রামের কাছে ময়ূরঝর্না হস্তি প্রকল্পের জঙ্গলে সেটিকে ছাড়া হবে। কিন্তু খবর পেয়েই বাধা দেন গ্রামের কিছু বাসিন্দা। তার পরেই তড়িঘড়ি বান্দোয়ানের যমুনা বনাঞ্চলের লোটঝর্না এলাকায় হাতিটিকে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সবের মধ্যে, পথেই ঘুমের ঘোর কিছুটা কেটে যায় দাঁতালের। লোটঝর্না গ্রামের জঙ্গলের কাছে এসে সেটি নড়াচড়া শুরু করে। বিপত্তি বুঝে ট্রাকটি একটি জমির আলের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কোনও ভাবে ট্রাক থেকে হাতিটিকে নামানো হয়। কিন্তু তার পায়ের শেকল খোলার সময় আর পাওয়া যায়নি। বন দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘খোলার অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন আবার ট্রাঙ্কুলাইজ় করলে ঘোর কাটতে আরও অনেক সময় লেগে যেত। লোকজনের ভিড় বাড়লে সমস্যাও হত।’’
পিছু নেওয়া হুলা পার্টির কিছু লোকজন জানাচ্ছেন, হাতিটি প্রায়ই চলতে চলতে দাঁড়িয়ে পড়ছে। পায়ে শেকল থাকায় শব্দ শোনা যাচ্ছে। সেটি খোলার জন্য কখনও শুঁড় দিয়ে টান মারছে। কখনও গাছের গোড়ায় লাথি মারছে। মাঝেমধ্যেই বসে পড়ছে। তবে বন দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘শেকল থাকলেও চলাচলে সমস্যা হবে না। ঘুমের ঘোর কেটে গেলে অনায়াসেই ওই শেকল খুলে নেবে হাতিটা।’’
হাতি ছাড়ার খবর পেয়ে কিছুটা আতঙ্ক দেখা দেয় লোটঝর্না লাগোয়া গুড়পানা, গোলকাটা, কাটাগড়ার মতো কিছু গ্রামে।
তবে বন দফতর জানিয়েছে, জঙ্গল-লাগোয়া এলাকায় কর্মীরা রয়েছেন। তাঁরা হাতির উপরে নজর রেখেছেন। সেটির ঝাড়খণ্ডে যাওয়া আপাতত সময়ের অপেক্ষা বলেই আশ্বস্ত করছে বন দফতর।