ব্লক অফিসের পথে জমিদাতারা। রঘুনাথপুরে। নিজস্ব চিত্র।
কারখানা স্থাপনের আগে, জমিদাতাদের দাবি ও সমস্যা মেটানোর দাবিতে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের নতুনডি পঞ্চায়েতের লছমনপুরে প্রকল্প এলাকায় মিছিল হয়েছিল। এ বার দাবি পূরণে ব্লক প্রশাসনে গণ স্মারকলিপি দিলেন জমিদাতারা। বৃহস্পতিবার প্রায় শ’দুয়েক জমিদাতা মিছিল করে ব্লক কার্যালয়ে যান। পরে, তাঁদের মধ্যে থেকে ছ’জনের একটি প্রতিনিধি দল বিডিও-র হাতে দশ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি তুলে দেন। বিডিও (রঘুনাথপুর ১) রবিশঙ্কর গুপ্ত জানান, স্মারকলিপি পেয়েছেন। দাবি ও অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।
নতুনডি পঞ্চায়েতের লছমনপুরে সুসংহত ইস্পাত প্রকল্প গড়ছে একটি বেসরকারি শিল্প সংস্থা। ২০০৯-এ কারখানা গড়তে জমি নেয় সংস্থাটি। কারখানার শিলান্যাস করেছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরে, অবশ্য সেই জমি রাজ্য শিল্প উন্নয়ন নিগমকে ফিরিয়ে দেয় সংস্থাটি। বর্তমানে ‘জঙ্গলসুন্দরী’ কর্মনগরী প্রকল্পে ওই এলাকায় ফের কারখানা গড়তে কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। তার আগে নিগম থেকে ছ’শো একর জমি নেয় সংস্থাটি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় সীমানা প্রাচীর তৈরির কাজ চলছে। যদিও কিছু বিষয়ে দাবি রয়েছে জমিদাতাদের একাংশ। তার অন্যতম, পুরোদমে কাজ শুরুর আগে জমিদাতা, শিল্প সংস্থা ও প্রশাসনের মধ্যে কারখানার সামগ্রিক বিষয় নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি করতে হবে। এ দিন জমিদাতাদের তরফে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, সীমানা প্রাচীর তৈরির আগে কী কারখানা হচ্ছে, তার বিবরণ তাঁদের দিতে হবে। এক জমিদাতা কৃপাসিন্ধু মণ্ডলের দাবি, অধিগৃহীত জমির মধ্যে আদিবাসীদের জাহের থান, শ্মশান, কবরস্থান, যাতায়াতের রাস্তা, পুকুর ও খেলার মাঠ রয়েছে। ওই সমস্ত এলাকা ফাঁকা রেখে নির্মাণ কাজের দাবি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি, জমিদাতাদের পরিবারের বেকার যুবক-যুবতীদের ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং’ দেওয়া, নির্মাণকাজে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া, পরবর্তী সময়ে যোগ্যতা অনুযায়ী, স্থানীয় বাসিন্দা তথা জমিদাতাদের পরিবারের লোকজনদের কারখানায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা, জমিদাতাদের ‘ল্যান্ড লুজ়ার্স’ শংসাপত্র দেওয়ার মতো কিছু দাবিও জানানো হয়েছে। জমিদাতাদের একাংশ বলেন, ‘‘আমরা শিল্প গড়ার পক্ষে। তাই অনেক আগেই জমি দিয়েছিলাম। তবে তার পরে, দীর্ঘ সময় জমি ফাঁকা পড়েছিল। এখন কারখানা গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। আমরা চাইছি, পুরোদমে কাজ শুরুর আগে জমিদাতাদের দাবি ও সমস্যা মেটাক প্রশাসন।”
ত্রিপাক্ষিক চুক্তির বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে জানিয়ে বিডিও বলেন, ‘‘অন্য দাবিগুলির ক্ষেত্রে জমিদাতাদের নির্দিষ্ট ভাবে তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে বিষয়গুলি জানাতে বলা হয়েছে। সেগুলি পেলে, পরবর্তী পদক্ষেপ হবে।”