Birbhum Weather Update

সংক্রান্তির আগে শীতের খেল! পারা ৭-এর ঘরে

শ্রীনিকেতন হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা কেবল স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম নয়, এই মরসুমের সবচেয়ে কমও বটে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৪:৫৩
Share:

শীতের সন্ধ্যায় সিউড়ির রাস্তায় এক প্রৌঢ়। ছবি: তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়

এক বছরেই ঘুরে গেল ছবিটা!

Advertisement

গত বছর মকর সংক্রান্তির সময় শীত কার্যত উধাও হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। হাড় কাঁপানো ঠান্ডা একেবারেই ছিল না। তাপমাত্রা এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, জানুয়ারিতেও গরম পোশাকের প্রয়োজন তেমন হয়নি। আগামী কাল, সোমবার আর এক মকর সংক্রান্তির আগে শীতে কাঁপছে গোটা বীরভূম! সোমবার সকালে জয়দেবে অজয় নদে পুণ্যস্নান করবেন অসংখ্য মানুষ। তবে, পৌষের একেবারে শেষবেলায় শীতের যা দাপট, তাতে সকালে স্নানের আগে বুক কেঁপে যেতে বাধ্য! জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৮-এর নীচে।

শ্রীনিকেতন হাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, শনিবার জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা কেবল স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম নয়, এই মরসুমের সবচেয়ে কমও বটে। বাইরে বেরোলেই উত্তুরে হাওয়ার কাঁপন টের পাচ্ছেন জেলাবাসী। ফের চাহিদা বেড়েছে শীত পোশাকের। ডিসেম্বরে প্রথম দিকে সপ্তাহ খানেক জেলার মানুষ শীত অনুভব করেছিলেন। জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০-এর নীচে পৌঁছেছিল। ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের শেষ দিকে বাংলাদেশে ঘুর্ণাবর্তর জেরে ফের গায়েব হয়ে গিয়েছিল শীত। হালকা সোয়েটার, উইন্ডচিটার, মাফলারেই দিব্যি চলে যাচ্ছিল। বড়জোর একটা টুপি। সর্বনিম্ন তারমাত্রা ঘোরা ফেরা করছিল ১৫ থেকে ১৭ ডিগ্রির আশপাশে।

Advertisement

তবে, সেটা সামলে নতুন বছরের প্রথম দিকে ফের কাঁপন ধরানো বাতাস বইতে শুরু করে জেলায়। দিন তিনেক তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করছিল ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ধারেপাশে। তার পরেই পশ্চিমি ঝঞ্ঝার হানায় ফের শীত কমেছিল। জাঁকিয়ে শীত শুক্রবার থেকে টের পাচ্ছেন জেলার মানুষ। শুক্রবার জেলার সর্বনিম্ন তামমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার সেই রেকর্ড ভেঙে গেল। ভারী সোয়েটার, জ্যাকেট, লেপকম্বলের আবার কদর বেড়েছে। আরাম পেতে আগুন জ্বালিয়ে হাত সেঁকে নেওয়া, গরম চা, তেলেভাজা বা লেপ জড়িয়ে জড়োসড়ো হয়ে বিছানায় থাকার সুযোগ পেলে ছাড়ছেন না কেউ-ই। সকাল ১০টা থেকে ঠান্ডা একটু কমছে। কুয়াশা কেটে শরীর রোদে সেঁকে নেওয়ার সুযোগ থাকে়ছে। বিকেল গড়ালেই ঠান্ডা হাওয়া খেল দেখাচ্ছে।

তাতে অবশ্য অখুশি হচ্ছেন না জেলার শীতবিলাসীরা। মকর সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে এখন পিঠেপুলির আদর্শ সময়। তবে, সকাল-সন্ধ্যা কাজের জন্য যাঁদের বাইরে বের হতে হয়, তাঁদের সমস্যা হচ্ছে। শ্রমজীবী, দিনমজুরদের কষ্ট বেড়েছে। দুবরাজপুরে একটি বাড়িতে গৃহকর্ম করেন প্রিয়া বাউড়ি। বলছেন, ‘‘সাতসকালের কনকনে ঠান্ডায় বাসন মাজতে আর কাপড় কাচতে খুব কষ্ট হচ্ছে।’’ একই অনুভূতি বধূদের। সিউড়ির দীপালি রায়ের কথায়, ‘‘এই ঠান্ডায় সকালে উঠে ঘরের সব কাজ করা বেশ কষ্টকর।’’ কনকনে ঠান্ডায় জবুথুবু হয়ে যাচ্ছেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। শিশুদেরও যতটা সম্ভব পোশাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করছেন বাবা-মা। খুব সকালে স্কুল যেতে সমস্যায় পড়ছে স্কুল পড়ুয়ারা। তবে, রবি ও সোম ছুটি থাকায় অভিভাবকেরা স্বস্তি পেয়েছেন।

তবে, এই শীতও ক্ষণস্থায়ী হতে পারে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, আগামী মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টি হতে পারে। বা মেঘলা থাকবে আবহাওয়া। যদিও বীরভূম সেই তালিকায় নেই। তবে, শীতের পথে বাধা পড়তে পারে। মকর সংক্রান্তি পর্যন্ত হাড় কাঁপানো ঠান্ডা থাকবে। সোমবার লক্ষ মানুষ অজয়ের ঘাটে স্নান করবেন। বসছে জয়দেব-কেঁদুলির বিখ্যাত মেলা। শনিবার থেকেই লোকজন অজয়ের ধারে আসতে শুরু করেছেন। তাঁদের একাংশ বলছেন, ঠান্ডা না থাকলে কি আর মকর স্নান জমে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement