প্রতীকী চিত্র।
মামলা প্রত্যাহারের জন্য কখনও আসে হুমকি, কখনও প্রলোভন। প্রকৃত বিচার পেতে সময় যত গড়ায় পরীক্ষাটাও ততই কঠিন হয়ে ওঠে। তেলঙ্গানায় তরুণী পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনের পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পরে এমনই মত জানাচ্ছেন গত সেপ্টেম্বরে বাঁকুড়ায় গণধর্ষণের শিকার হওয়া মানসিক ভারসাম্যহীন বধূর স্বামী।
বাঁকুড়া মহিলা থানার তৎপরতায় ওই বধূকে ধর্ষণে অভিযুক্তদের সাত জনের মধ্যে ছ’জনই গ্রেফতার হয়েছে। তারপর থেকে ধৃতেরা জামিনও পায়নি। তবে এক অভিযুক্ত এখনও অধরা। শুক্রবার সেই বধূর স্বামী বলেন, “পুলিশ ও প্রতিবেশীরা সব রকম ভাবে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। তা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে আমাকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দেওয়া হয়েছিল। তাতেও আমি দমিনি বলে নানা প্রলোভনও দেওয়া হচ্ছে।”
তাঁর বক্তব্য, দুষ্কৃতীরা চরম শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত কোনও কিছুতেই তিনি দমবেন না। তবে তারই মাঝে মনে আলোড়ন ফেলেছে উত্তরপ্রদেশের উন্নাওয়ের ঘটনা। তিনি বলেন, “উন্নাও-তে সাক্ষ্য দিতে যাওয়ার পথে যুবতীর গায়ে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা মনে প্রভাব ফেলে। তাই অভিযুক্তেরা যাতে কোনও ভাবেই জামিন না পায় সেটাই এখন নিশ্চিত করতে হবে।’’
এ দিন দিনভর বাঁকুড়া শহরের আনাচে কানাচে তেলঙ্গানার ওই ঘটনা আলোচনার মধ্যে উঠে এসেছে। আর সেই প্রসঙ্গেই উঠে এসেছে দীর্ঘমেয়াদি বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন ধর্ষণের বিচার চাওয়া পরিবারগুলির নানা সমস্যার কথাও। শহরের বুদ্ধিজীবীদের বড় অংশই দাবি তুলেছেন, ধর্ষণের মামলার নিষ্পত্তি নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে করা দরকার। বাঁকুড়ার পাবলিক প্রসিকিউটর অরুণ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ধর্ষণের ঘটনার দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষেই কাজ করেছে বাঁকুড়া আদালত। এমনকি ,অভিযুক্তেরা যাতে জামিন না পায়, তা নিয়েও সতর্ক থাকা হচ্ছে।’’
এক্ষেত্রে অরুণবাবু উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরছেন ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারির একটি ঘটনার কথা। এক ছাত্রী বন্ধুর সঙ্গে সরস্বতী পুজো দেখতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। ঘটনার ঠিক দু’বছরের মাথাতেই ওই মামলার নিষ্পত্তি হয়। দোষীরা সাজা পায়। অরুণবাবু বলেন, “ধর্ষণের মত ঘটনাগুলিকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এর দ্রুত নিষ্পত্তি করতে বিচারক ও আইনজীবী উভয় পক্ষই চেষ্টা করছেন। সহজে জামিনও পাচ্ছে না অভিযুক্তেরা।”