গোরাচাঁদ কান্ত (বাঁ দিকে) ও আনন্দময় ঘোষ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়া জেলা থেকে এ বছর ‘শিক্ষারত্ন’ পাচ্ছেন বাঁকুড়ার লোকপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক গোরাচাঁদ কান্ত এবং সোনামুখীর মদনপুর জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দময় ঘোষ। শুক্রবার এ কথা জানান জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পীযূষকান্তি বেরা। তিনি বলেন, ‘‘সেরা বিদ্যালয়ের সম্মান পাচ্ছে বাঁকুড়ার পোয়াবাগানের বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল।’’
গোরাচাঁদ বড়জোড়ার বেলুট প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দধিমুখা উচ্চবিদ্যালয়ে পড়েন। ইংরেজিতে স্নাতক হন রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজ থেকে। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিয়মিত স্মার্ট ক্লাস চালানোর পাশাপাশি পড়ুয়াদের চরিত্র গঠনে বিশেষ জোর দেন তিনি। বিদ্যালয়ে নিয়মিত সচেতনতা শিবির হয়। তামাক বন্ধে ও স্মার্ট ফোনের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার থেকে পড়ুয়াদের দূরে রাখতে নিয়মিত সচেতনতা প্রচারও করেন তিনি। করোনা-কালে দুঃস্থ পড়ুয়াদের বাড়িতে বইখাতা, খাবার পৌঁছে দিয়েছিলেন ওই শিক্ষক। গ্রামের কেউ বাঁকুড়ায় ডাক্তার দেখাতে বা পড়াশোনার কাজে এলে, তাঁর কাছেই থাকেন। গ্রামের দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে থাকেন তিনি। ওই শিক্ষক বলেন, ‘‘বিদ্যালয়ের বেশির ভাগ ছাত্রছাত্রী দরিদ্র পরিবারের। তাদের সার্বিক বিকাশই আমার লক্ষ্য।’’
সোনামুখীর মদনপুর জয়নগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দময়ের কর্মজীবন শুরু ১৯৯৯-এ পাত্রসায়রের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ২০০৫ থেকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ার সময়ে কয়েক দিনের ব্যবধানে বাবা-মাকে হারান তিনি। বড় হয়েছেন দাদু, ঠাকুমা ও পিসির কাছে। তাঁর বিদ্যালয় ২০১৮-এ নির্মল বিদ্যালয় পুরস্কার পায়। বিদ্যালয়ে রয়েছে ফুল, ফল, ভেষজ উদ্যান, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের ব্যবস্থা। করোনা-কালে পাড়ার মন্দিরে পড়িয়েছেন ছাত্রছাত্রীদের। পরিবেশ-বান্ধব ইট (ইকো ব্রিকস) তৈরিতে উৎসাহ জোগান তিনি। অভিভাবকদের মধ্যে বাল্যবিবাহ, শিশুশ্রম নিয়ে সচেতনতা প্রচার করেন তিনি।
বিবেকানন্দ শিক্ষানিকেতন হাইস্কুল থেকে এ বছর মাধ্যমিকে ও ছ’জন মেধাতালিকায় স্থান পেয়েছে। বিদ্যালয়ে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করে ৩৫০০ জন। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়া ১২০০ জন। প্রধান শিক্ষক তপনকুমার পতি বলেন, ‘‘এমন ভাবে ছাত্রছাত্রীদের পড়ানো হয়, যাতে মাধ্যমিক পর্যন্ত তাদের বাইরে থেকে সাহায্য নিতে না হয়।’’