বড়জোড়ার সভায় শুভেন্দু অধিকারী ও সৌমিত্র খাঁ। ছবি: তারাশঙ্কর গুপ্ত
বাঁকুড়া জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষকে ‘ভাইপোর এজেন্ট’ বলে অভিযোগ তুললেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ওই সভায় বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ ও বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে ভুঁইফোঁড় সংস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের টাকা লুটের অভিযোগে সরব হলেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। যদিও বড়জোড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে বড়জোড়ার মানুষকে ভুল বোঝাতে পারবেন না বিজেপি নেতারা। সামনে নির্বাচন বলে এলাকায় বিজেপি নেতাদের দেখা যাচ্ছে। সারা বছর তাঁদের মানুষের পাশে দেখা যায় না।’’
শুক্রবার বড়জোড়ার ফুটবল ময়দানের দলীয় সভায় শুভেন্দু, সৌমিত্র-সহ কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিল্লেশ্বর সিংহ, বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুনীলরুদ্র মণ্ডল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শুভেন্দু অভিযোগ করেন, ‘‘ইডির রিপোর্টে জানা গিয়েছে, বড়জোড়া-আসানসোলে ২,৪০০ কোটি টাকার কয়লা কেলেঙ্কারি হয়েছে। এখানে ভাইপোর এজেন্ট আছে সুখেন বিদ (জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ)। টাকা তুলে নিয়ে গিয়েছে বিনয় মিশ্র।” চাকরি নিয়ে দুর্নীতির প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দু দাবি করেন, উচ্চশিক্ষিতরা এখানে চাকরি না পেলেও এক বিধায়কের বান্ধবী বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ পেয়েছেন।
সৌমিত্র অভিযোগ করেন, বড়জোড়ার বিধায়ক অলক মুখোপাধ্যায় বাগানবাড়ি তৈরি করেছেন, রাজ্য সরকারের জমিতে থাকছেন। আত্মীয়দের সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন। তাঁর আরও দাবি, ‘‘এখানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি কালীদাস মুখোপাধ্যায় একটি ভুঁইফোঁড় সংস্থার মালিক। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ৪-৫ হাজার কোটি টাকা চুরি করেছেন। ওকে গ্রেফতার করা হোক।” তৃণমূলের জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বলেন, “নিজের স্বার্থে দল বদল করা কোনও ব্যক্তির তোলা অভিযোগকে আমি গুরুত্ব দিই না।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের কর্মীদের মনোবল ফেরাতে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনারা ভয় পাবেন না। আমাদের বিধায়ক, সাংসদেরা বিডিও অফিসে থেকে মনোনয়ন জমা করাবেন। আপনারা বুথগুলিকে দুর্গ করুন। চটি পরা পুলিশ ভোট লুট করতে গেলে বাক্স ধরবেন আর পুকুরে ফেলবেন।’’
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বহু অযোগ্য মানুষ তালিকাভুক্ত হয়েছেন বলে দাবি করে শুভেন্দু বলেন, “আগামী সপ্তাহে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করে বঞ্চিতদের ঘর পাওয়ানোর চেষ্টা করা হবে।” এ প্রসঙ্গে আধিকারিকদের হুমকি দেওয়ার সুরে সৌমিত্র বলেন, “বিডিও জেনে রাখুন বিজেপি কর্মীদের আবাস তালিকা থেকে বাদ দিলে আপনাকে আদালতে নিয়ে যাব। বড়জোড়ার আইসি তৃণমূলের হয়ে কাজ করা বন্ধ করুন।” সৌমিত্রর বক্তব্য নিয়ে পুলিশ বা প্রশাসনের আধিকারিকেরা মন্তব্য করতে চাননি। তবে বড়জোড়া ব্লক তৃণমূল সভাপতি কালীদাস বলেন, “নির্বাচনের আগে মিথ্যা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন বিজেপি নেতারা। পঞ্চায়েত নির্বাচনেই মানুষ ওদের সব জবাব দেবেন।”