শুভেন্দু অধিকারী। —ফাইল চিত্র।
প্রকাশ্য সভা থেকে বিরোধী কর্মীদের ‘হাত কেটে’ নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন ময়ূরেশ্বর ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি জটিল মণ্ডল, এমন একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি।
ওই তৃণমূল নেতার বক্তব্যের ভিডিয়ো নিজের এক্স-হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) শেয়ার করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি জটিলের বিরুদ্ধে
নির্বাচন কমিশনে অভিযোগও জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা।কমিশনের কাছে জটিলের বিরুদ্ধে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েছেন। পাশাপাশি জেলা বিজেপির পক্ষ থেকেও ময়ূরেশ্বর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। জটিল অবশ্য ওই ধরনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বিজেপি-র দাবি, গত রবিবার তৃণমূলের উলকুণ্ডা অঞ্চল কমিটির কার্যালয় সংলগ্ন কর্মিসভা থেকে জটিল ওই হুমকি দেন। ওই সভায় জটিল ছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি জয়নাল আবেদিন, জেলা পরিষদের সদস্য অরুণ চট্টোপাধ্যায়, অঞ্চল সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সামসুল আলম মল্লিক। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় জটিলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমাদের নেত্রীর দেওয়া ভাতা নেবে, সাইকেল নেবে, রেশনের চাল খাবে। আর আমাদের বদনাম করলে শুনব না। তা হলে হাত কেটে নেওয়া হবে! পঞ্চায়েত থেকে বিধানসভা, সব জায়গায় আমরা আছি। ওরা ঢোল পাততেই পারবে না।’’ এখানেই শেষ নয়। জটিলকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘ওদের বলে দিতে হবে, ভোটের দিনে যেন বাড়ি থেকে না-বেরোয়। ভদ্র ভাবে শুনলে ভাল। না হলে ডাঙ (ডান্ডা) পেটা করে পেটাতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী ওদের বাপের বন্ধু নয়। ভোট পেরোলেই চলে যাবে। তখন কী হবে? এখনই ওদের হুমকি দিয়ে দিতে হবে। তাতে থানা-পুলিশ হলে আমরা দেখে নেব। কেস করতেই দেব না!’’
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, জটিলের এই হুমকি তাঁদের দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশ করেই। যদিও জটি লের পাল্টা দাবি, ‘‘আমি হাত কেটে নেওয়ার কথা বলিনি। আমি আসলে রাজ্য সরকারের সমস্ত ধরনের সুবিধা নেওয়ার পরেও যারা আমাদের ক্ষতি করবে, তাদের সাহায্য বন্ধের চেষ্টা করার কথা বলতে চেয়েছি।’’
প্রসঙ্গত, গত বছর ময়ূরেশ্বরের কোটাসুরে সভা করতে এসে শুভেন্দু অধিকারী জটিলকে দুর্নীতি প্রশ্নে এবং বিজেপি কর্মীদের শাসানোর অভিযোগ তুলে বিঁধেছিলেন। জটিলও পাল্টা সভায় বিরোধী দলনেতাকে বিঁধতে ছাড়েননি। বিজেপির স্থানীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য কমিটির সহসভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘জটিল মণ্ডলই শুধু নয়,
তৃণমূল নেতারা প্রতিটি নির্বাচনের আগেই এই ভাবে বিরোধীদের ধমকে চমকে এলাকা সন্ত্রস্ত করে তোলেন। আসলে রাজনৈতিক মাটি হারিয়ে সন্ত্রাস সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করতে চায় তৃণমূল। আমরা বিষয়টি রাজ্য কমিটিকে জানানোর পাশাপাশি থানাতেও লিখিত ভাবে অভিযোগ জানিয়েছি।’’
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জটিল কোন প্রেক্ষিতে ওই ধরনের কথা বলেছেন জানি না। তবে, এমন বক্তব্য দল সমর্থন করে না। বিষয়টি নিয়ে দলে আলোচনা হবে।’’