Suri

আসবেন মমতা, কোন্দল রুখতে আসরে বিকাশ

প্রকাশ্যে কাউন্সিলর ও সভাধিপতির দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুর কাউন্সিলরদের কী ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিউড়ি শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:২০
Share:

সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী।

জেলা ক্রীড়া সংস্থার সামনে বিতর্কিত নির্মাণ বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। কিন্তু তার জেরে প্রকাশ্যে আসা সিউড়ির কাউন্সিলরদের মধ্যে ‘দ্বন্দ্ব’ আড়াল করতে আসরে নামতে হল খোদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীকে। মঙ্গলবার বিকেলে পুরসভার সমস্ত কাউন্সিলরকে জেলা পরিষদে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিকাশ। রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয়েছে তাঁদের মধ্যে।

Advertisement

প্রকাশ্যে কাউন্সিলর ও সভাধিপতির দাবি, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুর কাউন্সিলরদের কী ভাবে দায়িত্ব দেওয়া হবে তা নিয়ে এবং উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা হয়েছে। তবে কাউন্সিলরদের একাংশ আড়ালে জানিয়েছেন, চলতি মাসেই জেলায় আসতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী তথা দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে কোন্দল যাতে সামাল দেওয়া যায় সেই কারণেই ডাকা হয়েছিল বৈঠক।

ক্রীড়া সংস্থার মাঠে ‘বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স’ নির্মাণ নিয়ে নালিশ জানিয়ে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির কাছে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল তাতে সই ছিল সিউড়ির ২১ কাউন্সিলরের মধ্যে ১৪ জনের। নিশানায় ছিলেন পুরপ্রধান প্রণব কর ও উপ-পুরপ্রধান বিদ্যাসাগর সাউ। শেষ পর্যন্ত জেলাশাসক বিধান রায় ও জেলা সভাধিপতি বিকাশের পরিদর্শনের পর ওই নির্মাণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়।

Advertisement

কিন্তু এই ঘটনা সামনে আসতেই চর্চা শুরু হয়ে যায় কাউন্সিলরদের নিজেদের মধ্যে বিভাজন নিয়ে। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিপক্ষে ১৪ জন থাকায় বিক্ষুব্ধদের পাল্লা ভারী ছিল। তাই পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আসার মতো পরিস্থিতি রুখতে তড়িঘড়ি আসরে নামেন বিকাশ। এ দিন বৈঠক থেকে বেরিয়ে পুরপ্রধান প্রণব কর বলেন, ‘‘বিকাশদা যা বলবেন সেটাই শেষ কথা।’’

তবে তৃণমূলের অন্দরের খবর, কেন আপত্তি তোলা হয়েছে, কেন পুরপ্রধান ও উপ-পুরপ্রধান সঙ্গে বাকিদের মতপার্থক্য হচ্ছে এমন নানা বিষয় নিয়ে দু’পক্ষ এ দিনের বৈঠকে নিজেদের মতামত জানান।

তৃণমূল সূত্রের খবর, বৈঠকে সভাধিপতি জানিয়ে দেন, মতের অমিল হলে তাঁকে জানানো যায়। কিন্তু এ ভাবে ফাটল প্রকাশ্যে নিয়ে আসার যুক্তি নেই। সেটাও আবার মুখ্যমন্ত্রীর সফরের আগে। কারণ চিঠি পাঠানো হয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

কাউন্সিলরদের একাংশ আড়ালে বলছেন, ‘‘দীর্ঘ বৈঠকের পর আপাতত স্থিতাবস্থা তৈরি হয়েছে। দিদি আসার আগে সকলে একজোট থাকব কথা দেওয়া হয়েছে। তবে দ্বন্দ্ব কতদিন চাপা থাকবে সেটা সময় বলবে।’’

এই আবহেই মদ্যপ অবস্থায় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের বাড়িতে চড়াও হয়ে গালিগালাজ করার অভিযোগ উঠল জনা তিনেক যুবকের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে ঘটনািট ঘটে শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুকুমার মালের বাড়িতে। পুলিশ গিয়ে তিন জনকে থানায় নিয়ে আসে। তবে কাউন্সিলরের তরফে লিখিত অভিযোগ না হওয়ায় আটক যুবকদের ছেড়ে দেওয়া হয় বুধবার।

ওই কাউন্সিলর দাবি করেন, সিউড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠের সামনে নির্মাণের বিরোধিতা করে দলের রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি করার আক্রোশ থেকে এমন হামলা হয়ে থাকতে পারে। তবে কেন লিখিত অভিযোগ করলেন না সেই প্রশ্নের উত্তরে সুকুমার বলেন, ‘‘দলের নেতাদের সব জানিয়েছি।’’

উপ পুরপ্রধান তথা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক বিদ্যাসাগর সাউ বলেন, ‘‘নির্মাণের বিষয়টি মিটে গিয়েছে। যারা চড়াও হয়ে এমন কাণ্ড করেছে তার তীব্র নিন্দা করছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement