একান্ত আলোচনা। রবিবার সাঁইথিয়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কাছে একগুচ্ছ দাবি উঠল ‘ইউনাইটেড সেন্ট্রাল রিফিউজি কাউন্সিল’ (ইউসিআরসি-র) এর বার্ষিক সভায়। রবিবার সাঁইথিয়া মুরাডিহি কলোনির বাসিন্দা প্রয়াত সুশীল বসাকের বাড়িতে ‘কান্তি বিশ্বাস নগর ও সুশীল বসাক মঞ্চে’ ইউসিআরসি-র রাজ্য কাউন্সিলের বার্ষিক সভা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা বিধানসভায় বামফ্রন্টের নেতা সুজন চক্রবর্তী, সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রামচন্দ্র ডোম, বীরভূমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদা, ইউসিআরসি-র রাজ্য সভাপতি জীবন ভট্টাচার্য, রাজ্যের যুগ্ম সম্পাদক মধু দত্ত ও নিরঞ্জন মজুমদার-সহ রাজ্য ও জেলা স্তরের নেতাকর্মীরা।
সংগঠনের সভাপতি ও যুগ্ম সম্পাদক এ দিনের সভা থেকে ২০০৩ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, ২০১৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর স্বরাস্ট্র দফতরের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নির্দেশিকা আইনে পরিণত করা, বিগত বাম সরকারের প্রস্তাব অনুযায়ী ৫০১০.৬০ কোটি টাকা দেওয়ার দাবিও জানানো হয়। এ ছাড়াও রাজ্য সরকার অনুমোদিত ৯৯৮ গ্রুপভুক্ত কলোনি ও বিশেষ গ্রুপভুক্ত ৬৯৮টি কলোনির স্বীকৃতি, ১৪৯, ১৭৫ ও ৬০৭ গ্রুপভুক্ত কলোনিগুলির উন্নয়নে অর্থ মঞ্জুর ও উদ্বাস্তুদের দলিল প্রদানের দাবি তোলা হয়। রাজ্য সরকারের কাছেও সাত দফা দাবি জানানো হয়েছে। বেলা ১১টা নাগাদ সভা শুরু হয়ে ঘণ্টা পাঁচেক পরে শেষ হয়।
সভার শুরুতে প্রয়াত নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। সভার শুরুতে বক্তব্য রাখেন রামচন্দ্র ডোম। তিনি অভিযোগ তোলেন, ‘‘ও পার বাংলা থেকে আসা বাস্তুহারাদের কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার নানা ভাবে বঞ্চিত করছে।’’ একই অভিযোগ উঠে আসে জেলা নেতৃত্বের বক্তব্যেও। নেতৃত্বের অভিযোগ, ‘‘বাস্তুহারাদের সুযোগ সুবিধা পেতে বিধায়কদের কাছ থেকে রিফিউজি শংসাপত্র লাগে। কিন্তু শাসক দলের বিধায়কেরা সেই শংসাপত্র দিতে চান না। ফলে সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বহু বাস্তুহারা।’’ শাসক দলের বিধায়কদের কেউই অবশ্য সে কথা মানতে চাননি।
এ দিনের বার্ষিক সভায় ছিলেন বাম নেতা সুজনবাবু। তাঁর মন্তব্য, ‘‘আমি নিজে এক জন উদ্বাস্তু। তাই বাস্তুহারাদের যন্ত্রণা আমি বুঝি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তৎকালীন সরকার ঘোষণা করেছিল ও পার বাংলা বা পাকিস্থান থেকে যাঁরা আসবেন তাঁদের নাগরিকত্ব ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। কিন্তু, তা ঠিক ভাবে মানা হয়নি।’’ বাম সরকারের সময়ে তার অনেকটা সুরাহা হয় বলে দাবি করে সুজনের মন্তব্য, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের মতো এত বড় পুনর্বাসনের ছবি আর কোথাও নেই।’