কুষ্ঠ রোগীর অঙ্গবিকৃতির সফল অস্ত্রোপচার 

সঞ্জয়বাবু জানান, ২০১৯ সালে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক থেকে কুষ্ঠরোগে অঙ্গবিকৃতি ঘটে যাওয়া বছর কুড়ির ওই যুবকের সন্ধান মেলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামপুরহাট শেষ আপডেট: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২২
Share:

প্রতীকী ছবি।

সীমিত সাধ্যের মধ্যে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত রোগীর অঙ্গবিকৃতির সফল অস্ত্রোপচার হল রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বুধবার হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বাসিন্দা, এক যুবকের বাঁ হাতের আঙুলে এই অস্ত্রোপচার হয়। এর আগে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত মুরারই ১ ব্লকের এক বধূর অস্ত্রোপচার করেছিল রামপুরহাট মেডিক্যাল। এ দিন দ্বিতীয়বার একই অস্ত্রোপচার সাফল্যের সঙ্গে করলেন সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকেরা।

Advertisement

রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার ডিস্ট্রিক্ট লেপ্রোসি কনসালটেন্ট তথা চিকিৎসক সঞ্জয় দাস জানান, বীরভূম জেলার আশপাশে কোনও স্বাস্থ্যজেলায় সরকারি সংস্থার মাধ্যমে এই ধরনের অস্ত্রোপচার করা হয়নি। ২০১৫ সালে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলা পৃথক ভাবে কাজ শুরু করে। সেই স্বাস্থ্যজেলার মধ্যে ২০১৬ সালে কুষ্ঠ বিভাগ আলাদা ভাবে কাজ শুরু করে। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৯-এর পরে আবার কুষ্ঠরোগীর সফল অস্ত্রোপচার রামপুরহাটে হওয়ায় আমরা খুশি।’’ তিনি জানান, এর আগে রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলার অধীন ৫ জন কুষ্ঠরোগীর অস্ত্রোপচার বাইরে করা হয়েছে। এখন সেটা সম্ভব হচ্ছে রামপুরহাট মেডিক্যালেই।

সঞ্জয়বাবু জানান, ২০১৯ সালে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক থেকে কুষ্ঠরোগে অঙ্গবিকৃতি ঘটে যাওয়া বছর কুড়ির ওই যুবকের সন্ধান মেলে। নিয়ম অনুযায়ী, রোগীকে দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসার ওষুধ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে রামপুরহাট মেডিক্যালের শল্য বিভাগের প্রধান সিদ্ধার্থ বিশ্বাসের সঙ্গে আলোচনা করে রোগীর অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিদ্ধার্থবাবু বলেন, ‘‘এই ধরনের অস্ত্রোপচারকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘রিকনস্ট্রাকটিভ সার্জারি’ বলা হয়। কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত যুবকের বাঁ হাতের কড়ে আঙুল এবং তার পরের আঙুল বেঁকে গিয়েছিল এবং অঙ্গবিকৃতি ঘটেছিল। অস্ত্রোপচারের জন্য বাঁ পায়ের ঊরু থেকে মাংস নিয়ে সেটিকে বাঁ হাতের দুই আঙুলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে অস্ত্রোপচার করা হয়।’’ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়,অস্ত্রোপচার করতে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। অস্ত্রোপচারে সিদ্ধার্থবাবুকে অ্যানেস্থেটিস্ট অরূপ ঘোষ এবং শল্য চিকিৎসক ভিক্টর রায়, শিল্পা গুপ্ত, প্রীতি পাল। শল্য বিভাগে চিকিৎসাধীন ওই যুবকের বাবা বলেন, ‘‘বছর খানেক আগে কুষ্ঠরোগ ধরা পড়ার পরে ধারাবাহিক ভাবে ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। এখন অস্ত্রোপচারের ফলে ছেলে স্বাভাবিক জীবন পাবে। এর পুরো কৃতিত্বটাই এই হাসপাতালের চিকিৎসকদের।’’

Advertisement

রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি সুজয় মিস্ত্রি বলেন, ‘‘নতুন নতুন পরিষেবা চালুর মাধ্যমে রোগীদের যাতে কলকাতা বা অন্যত্র যেতে না হয়, তার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী দিনে আরও বেশি রোগী উপকৃত হবেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement