পরিদর্শনে সুভাষ। নিজস্ব চিত্র
উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাঁকুড়া মেডিক্যালে সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরির জন্য ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল আট বছর আগে। ওই ব্লকে এখনও ঠিক মতো পরিষেবা চালু না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন কেন্দ্রের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বাঁকুড়ার বিজেপি সাংসদ সুভাষ সরকার। বুধবার সুপার স্পেশালিটি ব্লক পরিদর্শনে গিয়েছিলেন মন্ত্রী। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই প্রকল্পে কেন্দ্র এবং রাজ্যের অনুদান যথাক্রমে ১২০ কোটি এবং ৩০ কোটি।
পরিদর্শন শেষে সুভাষের অভিযোগ, ‘‘চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিযুক্ত না হওয়ায় কোটি-কোটি টাকার আধুনিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি পড়ে নষ্ট হচ্ছে।’’ বাঁকুড়া মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের দাবি, ধাপে-ধাপে চিকিৎসা পরিষেবা চালু করা হচ্ছে ওই ব্লকে।
২৫০টি শয্যার সুপার স্পেশালিটি ব্লকে আধুনিক অপারেশন থিয়েটার, ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট-সহ কমবেশি ১৬টি ওয়ার্ড চালু হওয়ার কথা। ২০১৫-এ ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। শেষ হয় বছর খানেক আগে।
এ দিন সুপার স্পেশালিটি ব্লক পরিদর্শনে গিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেখেন, ওই ভবনে চলছে আউটডোর। তাঁর কথায়, ‘‘এই ভবনে হৃদরোগ, নিউরোলজি, নেফ্রোলজির আধুনিক চিকিৎসা হওয়ার কথা। জটিল রোগে আক্রান্তেরা যাতে এখানে উন্নত চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের সুযোগ পান, সেই লক্ষ্যেই সুপার স্পেশালিটি ব্লক বানানোর পরিকল্পনা করে কেন্দ্র।’’ তাঁর অভিযোগ, “এখন হাসপাতালের পুরনো বিভাগের আউটডোর-এক একাংশ এই ব্লকে স্থানান্তর করা হয়েছে। কোনও অভিজ্ঞ চিকিৎসকও দেখলাম না। পরিষেবা দেওয়ার মতো ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করা হচ্ছে না। ফলে পুরোদমে ইউনিটটি চালানো যাচ্ছে না।’’ তাঁর দাবি, ওই ব্লকে ১৮টি ডায়ালিসিস মেশিনে দৈনিক অন্তত ৯০ জনকে পরিষেবা দেওয়া যায়। অথচ, লোকের অভাবে এখানে ১২-১৫ জন রোগী পরিষেবা পাচ্ছেন। হৃদরোগের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় ‘ইলেক্ট্রোফিজিওলজি মেশিন’ অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। নিউরোসার্জারি এবং ওপেন হার্ট সার্জারির অপারেশন থিয়েটার নির্মাণ করা হলেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না। সুভাষের আক্ষেপ , “সেন্ট্রাল এসি এবং লিফ্ট-ও চালু হয়নি ভবনে। এতবড় পরিকাঠামো গড়া হলেও সেখানে রোগীদের পরিষেবা দেওয়া যাচ্ছে না। এটা দুর্ভাগ্যের।”
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বলেন, “ওই ব্লকে অনেক কাজই চালু করেছি। বেশ কিছু জিনিসপত্র এখনও আসছে। তিন তলার বিভাগ সাজানো হচ্ছে। অপারেশন থিয়েটার চালুর জন্য বিশেষজ্ঞেরা এসেছেন। তাঁরা সব খতিয়ে দেখছেন। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগের জন্য রাজ্যের কাছে আবেদন জানিয়েছি। দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেখান থেকে। যত দ্রুত সম্ভব পুরোদমে পরিষেবা চালুকরার চেষ্টা চলছে।”