মইনউদ্দিন মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র
চিন থেকে সুস্থ শরীরে ছেলে মইনউদ্দিন মণ্ডল ফিরে আসায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন দুবরাজপুরের খণ্ডগ্রামের দম্পতি শেখ গিয়াসউদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী শমিমা বেগম।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার ভোরে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পরে কয়েক দফা স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় চিনের শিন জিয়াং মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএসের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র মইনউদ্দিনকে। তারপর বিমান বন্দর থেকে বেরিয়ে সোজা ২২৫ কিমি দূরে বাড়ি পথ ধরেন তিনি। বেলা দেড়টায় ঘরে ঢুকতেই খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পরে গোটা পরিবারে। বাবা গিয়াসউদ্দিন এবং মা শমিমা বলেন, ‘‘কী যে শান্তি পেয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।’’
চিনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ে আতঙ্কে নাওয়া খাওয়া ভুলতে বসেছিলেন এই দম্পতি। ছেলে কীভাবে শিন জিয়াং মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রাবাস থেকে দেশে ফিরবে তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না তাঁদের। যাতে ছেলে কলকাতাগামী বিমান ধরতে পারে তাই তড়িঘড়ি মঙ্গলবারই টিকিট কেটে পাঠিয়েছিলেন গিয়াসউদ্দিনবাবু। শনিবার দুপুরের মধ্যেই ঘরের ছেলে ঘরে ফেরায় খুশি আত্মীয় পরিজনেরা।
দুবরাজপুরের পদুমা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার একসময়ের দাপুটে নেতা ছিলেন গিয়াসউদ্দিন। কিন্তু বাবার মতো রাজনীতি নয়, ছেলে মইনউদ্দিনের লক্ষ্য ছিল চিকিৎসক হওয়ার। জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ডেন্টাল কলেজে পড়ার সুযোগ পেলেও এমবিবিএসকে পাখির চোখ করেছিলেন তরুণ। পাছে সময় নষ্ট হয়, সেই ভেবে চিনের ওই মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। গত জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহ থেকে চিনে করোনাভাইরাসের হানায় আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকায় এবং মৃতের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকায় অস্থির হয়ে উঠেছিলেন তাঁরা। পাড়া পড়শিরাও নিয়মিত খোঁজ নিচ্ছিলেন।
গত এক সপ্তাহ ধরে দু’বেলা ছেলের সঙ্গে কথা বলেছেন ওই দম্পতি। ভারতীয় দূতাবাসও যোগাযোগ রেখেছিল বলে জানান তাঁরা। কর্তৃপক্ষের তরফে মেডিক্যাল কলেজ হস্টেল থেকে বাইরে বেরোতে নিষেধ করা হয়েছে ডাক্তারি পড়ুয়াদের। কিন্তু ওই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ক্রমশ ওই ভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় ফিরে আসেন মইনউদ্দিন।