Death

ফুটবল অনুশীলনের মধ্যে অসুস্থ, মৃত ছাত্র 

আদিত্য চক্রবর্তী (১১) নামে ওই ছাত্রের বাড়ি সাঁইথিয়ার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লিতে। সে সিউড়ির একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:২৫
Share:

অনুশীলন করার সময় মৃত্যু হল পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের। —প্রতীকী চিত্র।

ফুটবল অনুশীলন করার সময় মৃত্যু হল পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রের। পুলিশ জানিয়েছে, আদিত্য চক্রবর্তী (১১) নামে ওই ছাত্রের বাড়ি সাঁইথিয়ার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লিতে। সে সিউড়ির একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ত।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদিত্য সাঁইথিয়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে গত ৪ বছর ধরে স্থানীয় কামদাকিঙ্কর স্টেডিয়ামে ফুটবলের অনুশীলন করত। ওই ক্রীড়া সংস্থার হয়ে জুনিয়র টিমে বহু ম্যাচও খেলেছে সে। মূলত ডিফেন্সে খেলত। শুক্রবার বিকেলে অনুশীলন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ে আদিত্য। সঙ্গে সঙ্গে তাকে সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করা হয়। ওই বিষয়ে বিএমওএইচ নাসির ইকবাল কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ওই ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।

ওই মাঠেই সিনিয়র টিমে খেলেন আদিত্যর মামা রবীন সিংহ এবং তাঁর বন্ধু শাহাবাজ খানও। ঘটনার সময় তাঁরাও হাজির ছিলেন মাঠে। তাঁরা জানান, তাঁরা তখন মাঠের বাইরে বসেছিলেন। আদিত্য দৌড়চ্ছিল। মিটার পঞ্চাশেক দৌড়নোর পরেই সে বসে পড়ে। তারপর বুকে হাত চেপে শুয়ে পড়ে। তখন তাঁরা ছুটে গিয়ে তড়িঘড়ি ওকে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন। যাওয়ার পথেই সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে বলে জানান রবীন ও শাহাবাজ।

Advertisement

বছর নয়েক আগে আদিত্যর বাবা মারা যান। তার মা কমলা চক্রবর্তী রেলওয়ে নার্স হিসেবে অণ্ডালে কর্মরত। পটনায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। আদিত্য মামাবাড়িতেই থাকত। ছেলের মৃত্যুর খবর পেয়ে সাঁইথিয়ায় এসেছেন কমলা। প্রতিবেশীরা জানান, মা নিয়মিত ছেলের কাছে আসতেন। খেলাধূলা, পড়াশোনা ও আঁকায় মনোযোগী ছিল আদিত্য। আজ, রবিবারও তার জেলা স্তরের অঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ নভেম্বর উত্তরপ্রদেশের আলিগড় জেলায় মোহিত চৌধুরী নামে বছর চোদ্দোর এক ছাত্র স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য অনুশীলনের সময় অসুস্থ হয়ে পড়ে ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরে তাকেও মৃত ঘোষণা করা হয়। একই ভাবে গত সেপ্টেম্বর মাসে উত্তরপ্রদেশের লখনউয়ে ন’ বছরের এক স্কুল ছাত্রীও স্কুলে খেলা করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। আবার লোধি নগরেও কয়েক মাস আগে আট বছরের এক ছাত্রী হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। নাবালক-নাবালিকাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা উদ্বেগ বাড়াচ্ছে সমাজে।

আদিত্যর খেলার মাঠের শোকস্তব্ধ সতীর্থ ঋষি দত্ত, ঋষি ঘোষ, জিৎ দাস, অর্চি মুখোপাধ্যায় ওর মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না। তারা জানায়, আদিত্যর জন্য অনেক ম্যাচ তারা হারতে হারতেও জিতে ফিরেছে। ওর অভাব অপূরণীয়। সাঁইথিয়া স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক পিনাকীলাল দত্ত বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আদিত্য খুব নম্র স্বভাবের ছেলে ছিল। জুনিয়র টিমে সেরা এগারোর মধ্যে সে ছিল তিন নম্বরে। তার স্মৃতিতে আজ প্রশিক্ষণ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাইরে একটি খেলায় অংশ নিতে যাওয়ার কথা ছিল। সেটাও বাতিল করা হয়েছে।”

ময়না তদন্তের পরে এদিন ছাত্রের দেহ নিয়ে আসা হয় মাঠে। সেখানে ফুল দিয়ে তাকে শেষ বিদায় জানান সতীর্থ ও কর্মকর্তারা। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আদিত্য চক্রবর্তীর। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট ছাড়া মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement