ডাক্তার না থাকায় বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগের বাইরে হতাশ এক রোগিণী। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে মহিলা জুনিয়র ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়ারা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তারই মধ্যে সোমবার গভীর রাতে কালো কাপড়ে মুখ ঢেকে পাঁচিল টপকে বাঁকুড়া মেডিক্যালের ডাক্তারি ছাত্রীদের হস্টেলে এক বহিরাগত ঢুকেছে বলে অভিযোগ উঠল। খবর পেয়ে টহলদার পুলিশ সেখানে গিয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। তবে কারও হদিস পায়নি। এরপরেই পাঁচিলে কাঁটাতার দেওয়া ও বাড়তি নজরদারি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ দিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা আন্দোলন থেকে না সরায় মঙ্গলবারও বাঁকুড়া মেডিক্যালে রোগীদের হয়রানি কমেনি।
হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিকে সামনে রেখেই আন্দোলন করছেন ডাক্তারি পড়ুয়ারা। তার মধ্যে সোমবার ডাক্তারি ছাত্রীদের হস্টেলে অনুপ্রবেশের অভিযোগকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, হস্টেলের পিছনে যেখানে পাঁচিল বেয়ে সন্দেহভাজন লোকটি প্রবেশ করে বলে অভিযোগ উঠেছে, সেদিকে নজরদারি ক্যামেরা নেই।হাসপাতাল সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমাদের সতর্ক থাকা দরকার ছিল, এটা মানতেই হবে। তবে পিছনের দিকের পাঁচিল টপকেও কেউ ঢুকতে পারে, সেটা অনুমান করতে পারিনি।” তিনি জানান, রাত আড়াইটে নাগাদ তিনি খবর পান। ছাত্রীরা চিৎকার করে ওঠার পরেই ওই ব্যক্তি পালায়। পুলিশ সাথে সাথেই এসেছিল। কিন্তু কাউকে খুঁজে পায়নি।
সুপার বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পরে দ্রুত পূর্ত (সিভিল) দফতরের সঙ্গে কথা বলে পাঁচিলের উপরে কাঁটাতার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে বাড়তি নজরদারি ক্যামেরাও বসানো হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গেও কথা হয়েছে।’’ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ডাক্তারি পড়ুয়া ছাত্রীদের হস্টেলের সামনে রাতে পুলিশের টহল আরও বাড়ানো হচ্ছে।
এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালের বহির্বিভাগ খোলা থাকলেও ভিড় স্বাভাবিকের তুলনায় কম ছিল। তার মধ্যে দুপুরে কয়েক ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেন ডাক্তাররা। অন্তর্বিভাগেও চিকিৎসদের সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ।
বাঁকুড়া মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুন্ডু বলেন, “শিক্ষক-চিকিৎসদের নিয়ে কোনও ভাবে পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সবাই কাজ করছেন। তবুও চাপ এত বেশি যে পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা মুশকিল হচ্ছে। তবে রোগীরা সকলেই চিকিৎসা পাচ্ছেন।”