বাঁকুড়ার সেই স্কুল। — নিজস্ব চিত্র।
একের পর এক ক্লাসরুমের দরজার তালা ভেঙে ক্লাসরুমের মেঝেতে চক দিয়ে ছবি এঁকে চম্পট দিল চোর। যাওয়ার সময় লাগিয়ে দিয়ে গেল খুলে রাখা জলের কলের মুখ। বাঁকুড়ার কোতুলপুর ব্লকের বাঁকাজেটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চোরের এমন আজব ‘তাণ্ডবে’ হতবাক স্কুলের শিক্ষক থেকে অভিভাবক, পুলিশ।
জেলার অন্যতম সাজানো গোছানো প্রাথমিক বিদ্যালয়টি রয়েছে বাঁকাজেটেতে। স্কুলের দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা বিভিন্ন রঙিন ছবি। ক্লাসরুমের দেওয়ালেও আঁকা বিভিন্ন আকর্ষণীয় ছবি ও প্রাথমিকের পাঠ। স্কুলচত্বর হরেক গাছে ঢাকা। সেই স্কুলেই ক্লাস করে ছাত্রছাত্রীরা। অতি সম্প্রতি সরকারি নির্দেশে রাজ্যের আর পাঁচটি স্কুলের মতোই শনিবার স্কুল হওয়ার পর বাঁকাজেটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছুটি ঘোষণা করা হয়। স্কুলে দীর্ঘ ছুটির কথা মাথায় রেখে শিক্ষকেরা স্কুলের প্রতিটিশ্রেণিকক্ষ ভাল করে তালাবন্ধ করে দেন। চুরির ভয়ে স্কুলের পানীয় জলের পাইপ লাইনের মুখে থাকা ট্যাপ খুলে ক্লাসরুমে রেখে দেওয়া হয়েছিল। সোমবার সকালে স্থানীয় এক আইসিডিএস কর্মীর ফোন পেয়ে স্কুলে ছুটে এসে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত মাল দেখেন, স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসরুমের দরজায় লাগানো মোট আটটি তালা ভাঙা অবস্থায় পড়ে। এহ বাহ্য, ক্লাসরুমের মেঝেতে চক নিয়ে অদক্ষ হাতে আঁকা রয়েছে ছবিও!
স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত মাল বলেন, ‘‘তালা ভেঙে দুষ্কৃতীরা ভিতরে ঢুকে কিছু নিয়ে যায়নি। তারা শুধু ক্লাসরুমের মেঝেতে চক দিয়ে ছবি এঁকে রেখে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, খুলে রাখা জলের ট্যাপগুলিও পাইপের মুখে এঁটে দিয়ে গিয়েছে। সেই হিসাবে দুষ্কৃতীরা স্কুলে ঢুকে উপকারই করে গিয়েছে।’’ স্কুল থেকে কিছুই খোয়া যায়নি। তা হলে যারা মাঝরাতে তালা ভেঙে ক্লাসে ঢুকেছিল, তাদের কি ‘চোর’ বলা চলে? আতান্তরে পড়েছেন গ্রামের মানুষ। তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না, রাতে যারা এসেছিল, তাদের কী বলে চিহ্নিত করবেন! এই কাণ্ডে হতবাক অভিভাবক চণ্ডীচরণ রুইদাস। তাঁর সন্তান এই স্কুলেই পড়াশোনা করে। তিনি বলছেন, ‘‘কে বা কারা এমন কাণ্ড করল, তা বুঝেই উঠতে পারছি না। রাতের অন্ধকারে এই কাজ করায় গ্রামের মানুষও টের পাননি। তদন্ত করলে আসল দোষীরা ধরা পড়বে।’’