প্রতীকী ছবি
জলাধার বা বড় ঝোরাগুলিকে কী ভাবে নলবাহিত পানীয় জল প্রকল্পে ব্যবহার করা যেতে পারে তা খতিয়ে দেখতে পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিল রাজ্য সরকার। প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, বৈঠক সেরে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা ফিরে যাওয়ার পরে মঙ্গলবার সকালেই পুরুলিয়ার জেলাশাসকের কাছে মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের ফোন আসে। জলাধার ও ঝোরাগুলি কী ভাবে জল প্রকল্পের কাজে লাগানো যায় তা দ্রুত জানানোর নির্দেশ এসেছে বলে সূত্রের খবর।
জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করতে এসে প্রতি বারই গ্রামাঞ্চলে পানীয় জলের কী হাল তা খুঁটিয়ে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত রবিবার প্রশাসনিক বৈঠকের গোড়াতেই তিনি সেই প্রসঙ্গ তোলেন। ২০১৩ সালে জেলায় শুরু হওয়া জাইকা প্রকল্পের খোঁজ নেন।
মোট ১২৬০ কোটি টাকার প্রকল্প কয়েকটি ভাগে বিভক্ত রয়েছে। এই প্রকল্পের প্রথম পর্বে পুরুলিয়া ১, পুঞ্চা, বরাবাজার, মানবাজার ১ ও আড়শা ব্লকে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছনোর কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ওই দফায় জল পাবে পুরুলিয়া পুরএলাকাও। কিন্তু এখনও টেন্ডার প্রক্রিয়াই সম্পূর্ণ হয়নি জেনে বৈঠকে অসন্তুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠক থেকেই বিষয়টি জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি বিভাগের প্রধান সচিব মনোজ পন্থকে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের কাজে জল সংরক্ষণ ও ক্ষুদ্র সেচকে অগ্রাধিকার দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মঙ্গলবার মুখ্য সচিবের ফোন আসার পরেই বর্ষশেষে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর ও সেচ দফতরের আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করে এ দিনই বৈঠকে বসতে বলা হয়। নির্দেশ দেওয়া হয় তালিকা চূড়ান্ত করার। অতিরিক্ত জেলাশাসকের (জেলা পরিষদ) তত্ত্বাবধানে এ দিন জেলা পরিষদ প্রেক্ষাগৃহে একটি বৈঠক হয়। জানা গিয়েছে, সেচ দফতরের আওতায় বর্তমানে ৩২টি ছোট-বড় জলাধার রয়েছে। সেগুলিকে কী ভাবে নলবাহিত জল প্রকল্পের কাজে লাগানো যায়, আর কোন কোনও উৎস এই কাজে আসতে পারে— তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
গত জুনে জেলায় গো-টু ভিলেজ কর্মসূচি শুরু করার পরে অযোধ্যাপাহাড়ে পানীয় জলের সমস্যার কথা শোনেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। পাহাড়ের মার্বেল লেকের জল সংলগ্ন গ্রামগুলির বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায় কি না তা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে খতিয়ে দেখার জন্য বলেন তিনি। প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই প্রকল্পটিকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা চলছে।
পুরুলিয়ার জেলাশাসক মঙ্গলবার বলেন, ‘‘পানীয় জলের সমস্যার সমাধানে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো কাজ করছি। আরও বেশি মানুষের কাছে নলবাহিত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’’