জোড়শ্রেণির মন্দিরের কাছে উৎসবের প্রস্তুতি। ছবি: অভিজিৎ অধিকারী।
‘বিষ্ণুপুর মেলা’ শেষে মল্ল রাজধানীকে সুরে মাতাতে শুরু হচ্ছে ‘বিষ্ণুপুর মিউজ়িক ফেস্টিভ্যাল’।
কাল, শুক্রবার বিকেলে জোড়শ্রেণির মন্দির প্রাঙ্গণে উৎসবের উদ্বোধন করার কথা তথ্য সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে উৎসবের সুর বেঁধে দেবেন বিষ্ণুপুর রামশরণ মিউজ়িক কলেজের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকেরা। রবিবার পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৪টে থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর বসবে বলে জানান মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিদিন স্থানীয় ও বাইরের শিল্পীরা শাস্ত্রীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন। থাকছে হস্তশিল্পের ২০টি স্টল। সেখানে বালুচরি, স্বর্ণচরি ছাড়াও, থাকছে লন্ঠন, শঙ্খ, পোড়ামাটির সামগ্রী থেকে ডোকরা শিল্প। এ ছাড়া, পোড়ামাটির হাটের হস্তশিল্পীরা তিন দিন তাঁদের পসরা সাজিয়ে বসবেন জোড়শ্রেণির মন্দির প্রাঙ্গণে।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, করোনা-পরিস্থিতিতে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হস্তশিল্পীদের পাশে দাঁড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে স্বাস্থ্য-বিধি মেনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে বিভিন্ন রকমের মেলা। বিষ্ণুপুরে ‘বাংলা মোদের গর্ব’ ও ‘বিষ্ণুপুর মেলা’ শেষ হয়েছে ডিসেম্বরেই। এ বার শুরু হচ্ছে তিন দিনের মিউজ়িক ফেস্টিভ্যাল। তিনটি মেলাতেই হস্তশিল্পীদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মহকুমাশাসক জানান, দর্শকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে রসিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে পোড়ামাটির হাট পর্যন্ত রাজ্য পরিবহণ দফতরের একটি বাস ছাড়া হবে তিন দিন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা পিঠে বিক্রি করবেন।
মিউজ়িক ফেস্টিভ্যালে প্রথম দিনের আকর্ষণ সঙ্গীতশিল্পী জগন্নাথ দাশগুপ্ত, সন্দীপন সমাজপতি ও গীটারে দেবাশিস ভট্টাচার্য। দ্বিতীয় দিনে থাকছেন সঙ্গীত শিল্পী সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়, অসিত রায়, ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায়, তবলা বাদক তন্ময় বসু ও ইন্দ্রনীল মল্লিক। মৃদঙ্গ বাজাবেন শঙ্করনারায়ণ স্বামী, বাঁশি রনু মজুমদার। রবিবার শেষ দিনে থাকছেন সঙ্গীত শিল্পী সুভাষ কর্মকার, বামাপদ চক্রবর্তী, সেবক চট্টোপাধ্যায়, সৌমি মজুমদার ও সন্তুরবাদক তরুণ ভট্টাচার্য।
রাজ্য পর্যটন দফতরের উদ্যোগে ২০১৮ সাল থেকেই হয়ে আসছে সঙ্গীতের এই উৎসব। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত তথা বিষ্ণুপুর ঘরানার প্রচার ও প্রসারের জন্য এই উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন রামশরণ মিউজ়িক কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “বিষ্ণুপুর শহরের রাসমঞ্চ সংলগ্ন জায়গায় ‘বিষ্ণুপুর উৎসব’ নামে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের আসর আগেও হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের সঙ্গীত শিল্পীরা সেই অনুষ্ঠান গান পরিবেশন করে গিয়েছেন। নতুন প্রজন্মের কাছে এ ধরনের অনুষ্ঠানের গুরুত্ব অনেকখানি।’’