খাতড়া বাসস্ট্যান্ডের প্রবেশ পথে পুজোর মণ্ডপ তৈির চলছে। নিজস্ব চিত্র।
বাসস্ট্যান্ডের প্রবেশ পথ আটকে পুজোর মণ্ডপ তৈরির অভিযোগকে ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে বাঁকুড়ার খাতড়ায়। রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি ওই পুজো কমিটির সভানেত্রী হওয়ায় তা অন্য মাত্রা পেয়েছে। পথ আটকে যাতে মণ্ডপ তৈরি না করা হয়, সে জন্য রাজ্য সরকার পুজো কমিটিগুলিকে বার বার অনুরোধ করলেও খাতড়ায় কেন তা মানা হচ্ছে না, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
যদিও জ্যোৎস্না দাবি করেন, ‘‘স্ট্যান্ড থেকে বাসের ঢোকা ও বার হওয়ার দু’টি পথ রয়েছে। পুজোর এই ক’দিন একটি পথে চলাচলের জন্য চালকদের সহযোগিতা চাইছি। সবাই মানবিক হন। বছরের ওই ক’টা দিনের জন্য আমরা সবাই অপেক্ষা করে থাকি।’’ কিন্তু ঢালু ও সঙ্কীর্ণ ওই পথে দু’টি বাস পাশাপাশি যাতায়াতের সময় যদি দুর্ঘটনা ঘটে যায়— প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দাদের একাংশ।
খাতড়ার মূল রাস্তা থেকে কয়েকশো মিটার দূরে বেশ কিছুটা নিচু এলাকায় কয়েক বছর আগে বাসস্ট্যান্ড চালু হয়েছে। রাস্তা ঢালু হওয়ায় বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি ঢোকার ও বেরোনোর আলাদা দু’টি পথ তৈরি করা হয়েছে। সে কারণে রাস্তা সঙ্কীর্ণ। রাস্তার পাশে গভীর গর্ত থাকায় রেলিং লাগানো আছে।
কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে বাসস্ট্যান্ডের প্রবেশ পথ আটকে বাঁশ দিয়ে মহিলা পরিচালিত ওই দুর্গাপুজোর মণ্ডপ তৈরি করার কাজ শুরু হওয়ায় বাসকর্মীরা আতান্তরে পড়েছেন। দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রয়েছেন বাসের যাত্রীরাও।
বাসকর্মীরা জানাচ্ছেন, বাসস্ট্যান্ড থেকে দু’টি আলাদা সঙ্কীর্ণ রাস্তা প্রায় দেড়শো মিটার গিয়ে মিলিত হয়ে মূল রাস্তায় উঠছে। একটি রাস্তায় মণ্ডপ তৈরি হওয়ায় আপাতত অন্য রাস্তা দিয়েই সমস্ত বাস যাতায়াত করছে। তাঁদের দাবি, আঁকা-বাঁকা রাস্তাটি বড়জোড় ২০ ফুট চওড়া। সেখানে দু’টি বাস (প্রতিটি কমবেশি আট ফুট চওড়া) মুখোমুখি চলে এলে পাশ কাটানো খুবই বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে। একে রাস্তা ভেঙে গিয়েছে, তার উপরে পাশে প্রায় ৩০ ফুট গর্ত। যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ওই বাসস্ট্যান্ড থেকে দৈনিক ১২০টি বাস চলাচল করে। ফলে, ঝুঁকি প্রবল। তাঁদের দাবি, প্রশাসন বিষয়টিতে নজর দিক।
খাতড়ার বাস মালিকদের মধ্যে শেখ রেজাউল হক ও শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের একটি পথ আটকে মণ্ডপ তৈরি হওয়ায় চালকেরা সমস্যায় পডেছেন বলে জানাচ্ছেন।’’ ইঁদপুরের গোবিন্দপুরের বাসিন্দা ওই বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী রবিলোচন মোদক বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার রাস্তা বন্ধ হওয়ায় অনেকটা পথ হেঁটে স্ট্যান্ডে ঢুকতে হচ্ছে।’’
পুজো কমিটির তরফে জানানো হয়েছে, গত বারে তাঁরা খাতড়া এসডিও অফিসের কাছে মণ্ডপ করেছিলেন। এ বার সেখানে জায়গার সমস্যা হওয়ায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে মণ্ডপ সরিয়ে আনা হয়েছে।
কিন্তু পুজোর অনুমতি কি নেওয়া হয়েছে?
খাতড়া থানার পুলিশ জানিয়েছে, শহরের কোনও পুজো কমিটিই বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অনুমতি চেয়ে তাদের কাছে আবেদন করেনি।
কিন্তু এই পুজো কমিটি কি অনুমতি পাবে? এসডিও (খাতড়া) মৈত্রী চক্রবর্তী এবং এসডিপিও (খাতড়া) কাশীনাথ মিস্ত্রি বলেন, ‘‘অভিযোগ পাইনি। তা পেলে, বিষয়টি দেখা হবে।’’