সাংবাদিক বৈঠতে ইন্দপুরের তিন অঞ্চল সভাপতি। বাঁ দিক থেকে ভক্তরঞ্জন পাইন, ভক্তিপদ সাহানা ও দেবদাস মহান্তি। — নিজস্ব চিত্র।
আবার তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের আঁচে তপ্ত হয়ে উঠল বাঁকুড়ার ইন্দপুর। দিন কয়েক আগে দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দিব্যেন্দু সিংহ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছিলেন ইন্দপুর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি রেজাউল খান। এ বার রেজাউলের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাঁর অপসারণ চাইলেন ৩ অঞ্চল সভাপতি।
দিন কয়েক আগে তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার প্রতিটি অঞ্চলে অঞ্চল সভাপতির নাম ঘোষণা করেন দলের জেলা নেতৃত্ব। সেই তালিকা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভ ছড়ায় ইন্দপুর ব্লকে। এ নিয়ে দলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতির বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন রেজাউল। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই রবিবার ইন্দপুর ব্লকের ব্রাহ্মণডিহা, ইন্দপুর এবং ভেদুয়াশোল অঞ্চলের ৩ সভাপতি রেজাউলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। রেজাউলকে সরানোর দাবিও তুলেছেন তাঁরা। ব্রাহ্মণডিহা অঞ্চলের সভাপতি দেবদাস মহান্তির অভিযোগ, ‘‘রেজাউল খান সাংগঠনিক ভাবে আমাকে কোনও সহযোগিতা করছেন না। তিনি দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি করছেন। ব্লক সভাপতিকে দিয়ে যদি দলের লাভ না হয় তা হলে তাঁকে ওই পদে বসিয়ে রেখে লাভ কী?’’
একই সুর তৃণমূলের ভেদুয়াশোল অঞ্চলের সভাপতি ভক্তরঞ্জন পাইনেরও। তিনি বলেন, ‘‘রেজাউল খান দলের রক্ষক নয়, ভক্ষক হিসাবে কাজ করছেন। তিনি ঠিকাদারদের দ্বারা পরিচালিত হন। ব্লক সভাপতি দলের কোনও শৃঙ্খলা মানছেন না। আমরা দলের ব্লক সভাপতি পদে রদবদল চাইছি।’’ বিদ্রোহী ৩ অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন ইন্দপুর ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অসিত লায়েকও।
এই সম্মিলিত অভিযোগকে অবশ্য পাত্তা দিচ্ছেন না রেজাউল। তাঁর দাবি, ‘‘আমার বিরুদ্ধে স্বজনপোষণ এবং দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন। অতীতে যাঁদের নেতৃত্বে দল বিভিন্ন অঞ্চলে খারাপ ফলাফল করেছে আমি তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য দলের জেলা নেতৃত্বের কাছে আবেদন করেছিলাম। আমি হারতে আসিনি। অঞ্চল সভাপতিরা আমাকে ব্লক সভাপতি হিসাবে নিয়োগ করেননি। তাই তাঁরা কী বললেন তাতে কিছু যায় আসে না।’’
ইন্দপুরে দলের মধ্যেই এই ক্ষোভের খবর অবশ্য পাননি তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। যাঁর বিরুদ্ধে দিন কয়েক অভিযোগ তুলেছিলেন এই রেজাউল। তাঁকে ঘিরে এই টানাপড়েন নিয়ে দিব্যেন্দুর বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূলের এই কোন্দল নিয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।