সিউড়িতে পুলিশের কলার ধরে হুমকি যুবকের। —নিজস্ব চিত্র।
প্রকাশ্যে বন্দুক হাতে দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে শোরগোল পড়ল বীরভূমের সিউড়িতে। অভিযোগ, জমি সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই অশান্তির সূত্রপাত। মঙ্গলবার সকালে এলাকায় অভিযুক্তেরা বন্দুক হাতে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়ান। গুলিও ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে গ্রামবাসীরাই অভিযুক্তদের ধরে বেঁধে ফেলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সিউড়ির মিনিস্টিল এলাকায় ঢুকে পড়েন কয়েক জন যুবক। তাঁদের হাতে ছিল বন্দুক। তা উঁচিয়েই গ্রামবাসীদের শাসাতে থাকেন অভিযুক্তেরা। শূন্যে গুলিও ছোড়া হয়। তবে গ্রামবাসীরাই কৌশলে তাঁদের ধরে ফেলেন। তার পর বেঁধে মারধর করেন অভিযুক্তদের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় সিউড়ি থানার পুলিশ।
ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরালো হয়ে ওঠে। সামাল দিতে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। ধরপাকড়ও করেন। ঘটনাস্থলে যান সিউড়ি থানার আইসি। অভিযোগ, সে সময় তাঁর কলার ধরে হুমকিও দেওয়া হয়। পুলিশ এখনও পর্যন্ত ছ’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গণপিটুনিতে এক যুবক গুরুতর আহত হন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বুলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন ধরে ওই এলাকায় একটি জমি নিয়ে বিবাদ চলছিল। মঙ্গলবার সেই বিবাদ চরমে ওঠে। বন্দুক নিয়ে দুষ্কৃতীরা গ্রামে ঢুকে পড়ে। গ্রামবাসীদের আশঙ্কা, দিনের বেলায় যদি এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তবে রাতে কী হবে? সুরক্ষা কোথায়?
ঘটনা প্রসঙ্গে বীরভূমের তৃণমূলের জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ বলেন, ‘‘আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিবাদ। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। পুলিশ অতি সক্রিয়তার সঙ্গে ঘটনার মোকাবিলা করছে। আমরা দলগত ভাবে পুলিশ-প্রশাসনকে জানিয়েছি অভিযুক্তদের রাজনৈতিক রং না দেখে ব্যবস্থা নিতে।’’ কোথা থেকে দুষ্কৃতীদের হাতে বন্দুক এল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সেই প্রসঙ্গে কাজল বলেন, ‘‘ঝাড়খণ্ড থেকে আগ্নেয়াস্ত্র পাঠানো হয় বীরভূমকে উত্তপ্ত করার জন্য। দেখতে হবে এই আগ্নেয়াস্ত্র কোথা থেকে এসেছে।’’