—ফাইল চিত্র।
একে অতিরিক্ত গরমে রেশমের গুটিপোকা থেকে সুতোর উৎপাদন কম হয়েছে। তার উপরে বাজারে সুতোর দর কমে যাওয়ায় পুজোর আগে রেশম চাষিরা ক্ষতির মুখে। খরচ তুলতে অনেক চাষিকে বাধ্য হয়ে অভাবি বিক্রি করতে হচ্ছে বলেও খবর।
রামপুরহাট মহকুমার মধ্যে রামপুরহাট ২ ব্লকের দুনিগ্রাম অঞ্চলের বাবলাডাঙা, গোপালপুর, টিঠিডাঙা, জয়চন্দ্রপুর, মোতাইন, কবিরাজপুর এই সমস্ত অঞ্চলের চাষিদের মূল জীবিকা রেশম চাষ। এ ছাড়া নলহাটি ২ ব্লকের শীতলগ্রাম অঞ্চলের কামালপুর, হামিদপুর, টিঠিডাঙা, প্রসাদপুর, শীতলগ্রাম সহ ভদ্রপুর ১ পঞ্চায়েত, নলহাটি ১ ব্লকের বড়লা, কয়থা ১, কলিঠা, কুরুমগ্রাম এই সমস্ত অঞ্চলে রেশম চাষ বেশি হয়। চাষিরা জানালেন, এক বিঘে জমিতে তুঁত চাষ করলে বছরে পাঁচ বার রেশম সুতো উৎপাদনের সুযোগ মেলে। তার মধ্যে অগ্রহায়ণ, মাঘ এবং বৈশাখ মাসে সব থেকে বেশি রেশম সুতো উৎপাদন হয়। এ ছাড়াও
বছরে আরও দুটি মরসুমে কম পরিমাণে সুতো উৎপাদন করতে পারে রেশম চাষিরা।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং রেশম সুতো উৎপাদনকারী গুটিপোকার ডিম থেকে যথার্থ ভাবে পোকা উৎপাদিত হলে বছরে এক বিঘে তুঁত-জমি থেকে ২৫-৩০ কেজি রেশম উৎপাদন করতে পারেন চাষি। চলতি বছরে অতিরিক্ত গরমে রেশম চাষিদের অনেক তুঁত পাতা নষ্ট হয়েছে বলেও খবর। গরমের কারণে অনেক গুটিপোকার ডিম নষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলেও
সুতো উৎপাদন কম হয়েছে বলে চাষিরা জানান। রামপুরহাট ২ ব্লকের দুনিগ্রাম অঞ্চলের টিঠিডাঙা গ্রামের চাষি আপেল শেখ জানালেন,
পুজোর আগে রেশম সুতোর বাজার দর কেজিপ্রতি ১৫০০ টাকা থেকে ১৭০০ টাকায় নেমে গিয়েছে। মাস তিন, চারেক আগে এই দর ৩০০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। দুনিগ্রাম অঞ্চলের গোপালপুর গ্রামের ব্রজ মণ্ডল জানালেন, গত বছর দুর্গাপুজোর আগে সুতোর
দাম ২২০০ টাকা থেকে ২৫০০
টাকা ছিল।
দাম কমে যাওয়ায় চলতি বছরে এক বিঘে জমিতে নিজেরা চাষ করে ১ কেজি রেশম সুতো থেকে ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা লাভ হয়েছে বলে চাষিরা জানালেন। নিজে হাতে চাষ করেন না, এমন চাষি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে। গোপালপুর গ্রামের রেশম চাষি তরুণ মণ্ডলের মতে, ‘‘এ বছর বাজারে রেশম সুতোর চাহিদা কম না
থাকার এই অবস্থা।’’ ওই গ্রামেরই আর এক চাষি হলধর মণ্ডল জানালেন, বাজার দর ভাল না থাকার ফলে পুজোর মুখে খরচ
জোগানোর জন্য অনেক চাষি অভাবি বিক্রি শুরু করেছেন।