Shops

দোকান বিলি আজ, আশঙ্কা

বছরকয়েক আগে বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য ১৩৮টি দোকান ভাঙা হয়। ভাঙার আগে দোকান মালিকদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:৩৮
Share:

রসিকগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে দোকানঘর বিলিবণ্টনে দেরি হওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরে নড়ে বসল প্রশাসন।

Advertisement

মঙ্গলবার বিষ্ণুপুর বাসস্ট্যান্ডে ফ্লেক্স টাঙিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত বিষ্ণুপুর পুরসভা। তাতে বলা হয়েছে আজ, বুধবার সকালে পুরসভা কার্যালয়ে দোকানঘরগুলি লটারির মাধ্যমে বিলি করা হবে। বাসস্ট্যান্ডের তিনটি ব্লকে দোকানের বণ্টনের লটারি হবে। পুরসভায় হাজির থাকার কথা বলা হয়েছে দোকান মালিকদের। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, কোন দোকানদার, কোথায় দোকান পাবেন তা ঠিক হবে লটারির মাধ্যমে।

গত বুধবার জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান শ্যাম মুখেপাধ্যায়ের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন ছিল, শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ডে হকারদের পুনর্বাসন দিতে দেরি হচ্ছে কেন। তার পরে পুরপ্রধানকে নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘হকারদের বিষয়টি আমার কানে এসেছে। এটা গরিব লোকের ব্যাপার। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজটা করতে হবে। ক’দিনের মধ্যে পুনর্বাসন দিতে পারবেন? কারও অপেক্ষা না করে আপনি নিজে দিয়ে দিন।’’

Advertisement

বছরকয়েক আগে বাসস্ট্যান্ড তৈরির জন্য ১৩৮টি দোকান ভাঙা হয়। ভাঙার আগে দোকান মালিকদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কার দোকান কোথায় ছিল তার ছবিও তুলে রাখা হয়েছিল। ২০১৮ সালে ২৩ জুলাই পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী নতুন ঝাঁ চকচকে বাসস্ট্যান্ডের উদ্বোধন করেন। তার পরে দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও দোকান বিলি করা হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হন দোকান মালিকেরা। দোকান বিলি নিয়ে পুরসভা ও দোকান মালিকদের একাংশের মধ্যে চাপানউতোর চলে। সেই খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রীর কানেও।

পুরসভা ফ্লেক্স টাঙিয়ে দোকান বণ্টনের কথা জানালেও ওই প্রক্রিয়া আদৌ সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির মুখপত্র অরুণ দে দাবি করেন, তাঁদের কেউ বুধবার পুরসভা কার্যালয়ে যাবেন না। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘দোকান বিলিতে স্বজনপোষণ হতে পারে। এতদিন পুরসভা আমাদের সঙ্গে এক বারও আলোচনা করেনি। হঠাৎ করে ফ্লেক্স টাঙিয়ে দিয়েছে।’’

স্বজনপোষণের আশঙ্কা কেন? অরুণবাবুর বক্তব্য, ‘‘পুরসভার প্রভাবশালী এক ব্যক্তি যখনই আগে বাসস্ট্যান্ডে দোকান বিলি নিয়ে কথা বলতে এসেছেন, তখনই তিনি নিজের ঘনিষ্ঠ দোকানদারদের সঙ্গে আলোচনা করে চলে গিয়েছেন। বাকিদের ডাকেননি।’’

পুরপ্রধানের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘দোকান মালিকদের কোনও সংগঠন আছে বলে আমি জানি না। স্বজনপোষণের কোনও প্রশ্নই নেই।’’

দোকান মালিকদের সংগঠনের দাবি, লটারি করা হোক মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে। কারণ, মহকুমা প্রশাসনই দোকানদারদের নাম নথিবদ্ধ করেছিল। অরুণবাবুর বক্তব্য, ‘‘দোকানঘর ভাঙার সময় তোলা দোকানের ছবি, ভিডিয়ো এবং দোকানদারদের তালিকা মহকুমা কার্যালয়ে রয়েছে। তবে কেন বণ্টন হবে পুরসভার কার্যালয়ে। এর প্রতিবাদেই কেউ সেখানে যাবেন না।’’

মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরসভাকে দোকান বিলির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কোনও অসুবিধা হলে মহকুমা প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে।’’ পুরসভার এগজ়িকিউটিভ অফিসার রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের তিনটি ব্লকের ১৩৮টি দোকান বণ্টনের লটারি হবে। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত এই কাজ করতে বলেছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement