রসিদ হাতে। নিজস্ব চিত্র
পৌষমেলা শেষ হওয়ার পরে প্রায় এক মাস কাটতে চলল। এখনও মেলায় দোকান তৈরির জন্য দেওয়া ‘সিকিয়োরিটি মানি’ ফেরত পাননি বলে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, দু’চারদিনের মধ্যেই সমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।
এতদিন পৌষমেলায় স্টল বসানোর ক্ষেত্রে অনলাইন বুকিং চালু করা হয়নি। পুরনো রসিদ দেখিয়েই দোকানদারেরা মেলার মাঠে পুরনো জায়গাতে যে যার মতো স্টল করে বসে পড়তেন। জায়গার দামের মধ্যেও প্রচুর বৈষম্য ছিল বলে অভিযোগ। এর ফলে স্টল বসানোর ক্ষেত্রে একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী ও কিছু দালাল চক্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে বারবার। তাই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দুর্নীতি রুখতে পৌষমেলায় অনলাইনে স্টল বুকিং প্রক্রিয়া চালু করতে উদ্যোগী হয়। মেলা যাতে চার দিনের হয় ও চারদিনের পর কোনও দোকানদার যেন মেলার মাঠে বসে থাকতে না পারেন সে জন্য এ বছর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে স্টল বসানোর জন্য জায়গার ভাড়া ছাড়াও আলাদাভাবে সিকিয়োরিটি মানি জমা রাখা হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বলা হয়েছিল মেলা শেষ হয়ে যাওয়ার পরে পরেই জমা রাখা সিকিয়োরিটি মানি অনলাইনের মাধ্যমে ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এখনও অধিকাংশ ব্যবসায়ী জমা রাখা সিকিয়োরিটি মানি ফেরত পাননি বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। তাঁদের ক্ষোভ, এরফলে অধিকাংশ ব্যবসায়ী সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রয়েছেন, তাঁদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, এক হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী অনলাইনে স্টল বুক করেছিলেন। কেউ ১২ হাজার, কেউ ৮ হাজার, কেউ বা জমা ৬ থেকে ৫ হাজার টাকা জমা রেখেছিলেন। ব্যবসায়ীরা প্রশ্ন তুলছেন, ‘‘মেলা ২৭ শে ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও এখনও কেন ওই টাকা ফেরত পাওয়া গেল না?’’
ব্যবসায়ী আমিনুল হুদা, অরুণকুমার পাল, চঞ্চল দাসরা বলেন, ‘‘পৌষমেলার স্টল করার সময় জমা দেওয়া সিকিয়োরিটি মানি আজও ফেরত পাইনি। টাকা না পেয়ে প্রভূত সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে আমাদের। আমরা চাই দ্রুত বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিন।’’ সোমবার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের কাছে সিকিয়োরিটি মানি ফেরত চেয়ে একটি আবেদনপত্রও জমা দেন।
বিশ্বভারতীর আধিকারিকেরা ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে জানাচ্ছেন, কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্ত টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে। এ বিষয়ে বিশ্বভারতীর যুগ্ম কর্মসচিব তথা গণনা আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যা হয়েছিল, যে কারণে সিকিয়োরিটি মানি ফেরত দেওয়া যায়নি। যাঁরা বাড়তি টাকা দিয়ে জায়গা বুক করেছিলেন এমন ২০০ জনকে আমরা টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছি। বাকিদেরও দু-একদিনের মধ্যে টাকা ফেরত দিয়ে দেওয়া হবে।’’