শিবপুরে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
এলাকা জুড়ে পোস্টার দিয়ে ফের আন্দোলনের ডাক দিলেন শিবপুর মৌজার জমিহারা কৃষকেরা। শিল্পের দাবিতে গণঅবস্থানের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। সেই কথা জানিয়েছে শনিবার শতাধিক পোস্টার দেওয়া হয়েছে শিবপুর মৌজার একাধিক জায়গায়। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে— তাঁদের জমি, অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া রুখতে একজোট হয়ে লড়াইয়ের কথা, তার প্রতিবাদে বিরুদ্ধে ২১ জুলাই গণঅবস্থানের বার্তাও। প্রস্তাবিত বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয়ের দেওয়াল, গীতবিতান আবাসনের দেওয়াল, রাস্তার মোড়ে মোড়ে এ দিন দেখা গিয়েছে সে সব পোস্টার।
শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের তরফে জানা গিয়েছে, শিল্পের দাবিতে রবিবার গণঅবস্থান করবে তারা। রবিবার ওই অবস্থানে যোগ দেওয়ার কথা বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি, সেভ ডেমোক্রেসি ফোরামের রাজ্য নেতাদের।
২০০০-০১ সালে শিবপুর মৌজা এলাকায় শিল্প গড়তে জন্য প্রায় ৩০০ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। বামফ্রন্ট সরকারের আমলে অধিগৃহীত ওই জমির জন্য বিঘা পিছু ৬৮ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ ধার্য করা হয়। কিন্তু অভিযোগ, তার বদলে মিলেছিল বিঘাপ্রতি ৪৮ হাজার টাকা। অনেক কৃষক ক্ষতিপূরণের চেক পাননি বলেও অভিযোগ। কিন্তু রাজ্যে পালাবদলের পরে ২০১৫ সালের শেষের দিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, শিবপুরে অধিগৃহীত জমির মধ্যে ১৩১ একর জমিতে গীতবিতান আবাসন গড়বে সরকার। ২০ একর জমিতে বিশ্বভারতীর ধাঁচে বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। তা ছাড়া ৫০ একর জমিতে হবে বাজার, ১০ একরে আইটি হাব। শিল্পের জন্য অধিগৃহীত জমিতে আবাসন বা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, গড়তে হবে শিল্পই— সেই দাবিতে সরব হন জমিহারা কৃষকদের একাংশ। শিল্প না হলে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিও ওঠে। শিবপুর জমিহারা কৃষক সংগ্রাম মঞ্চের আহ্বায়ক শৈলেন মিশ্র, তপন সাহা বলেন, ‘‘শিল্পের জন্য নেওয়া জমিতে শিল্পই করতে হবে। না হলে জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। এই দাবিতে গণঅবস্থানে বসতে চলেছি।’’ মঞ্চের সদস্য মির্জা জসিমুদ্দিন বলেন, ‘‘কৃষকদের কাছে শিল্পের নামে জমি নেওয়া হয়েছিল। কৃষকেরা সেই জমিতে শিল্পই চান। সুরাহা না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’
তবে ওই আন্দোলনকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূল সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘শিবপুরে রাজ্য সরকার বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় ও গীতবিতান গড়ছে। তাতে আগামী দিনে ওই এলাকার অনেকের কর্মসংস্থান হবে। বর্তমানে শিবপুর মৌজার জমি সংক্রান্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টের বিচারাধীন। কিন্তু বাইরের কিছু লোক এলাকাকে নতুন করে অশান্ত করার চেষ্টা করছেন। উন্নয়নকে বাধা দিতে চাইছেন। তবে কোনও ভাবেই উন্নয়ন রোখা যাবে না।’’