দূষণ: শান্তিনিকেতনে পৌষমেলার মাঠে এ ভাবে চলছে রান্না-খাওয়া। বুধবার। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পৌষমেলা শেষ হয়েছে কবেই। মেলার মাঠ নিয়ে সেই তীক্ষ্ণ নজরদারিও অতীত। সেই সুযোগে দূষিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মেলার মাঠ।
শীত মানেই ভরা শান্তিনিকেতন। ঠান্ডা যেমনই থাকুক না কেন, পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকে এই জায়গা। স্কুল বা টিউশনের ছাত্রছাত্রীরা কিংবা একটি পাড়ার সব অধিবাসী— দল বেঁধে আসেন ফি-শীতে। পর্যটকদের বাস রাখার জন্য মেলার মাঠে রয়েছে পার্কিং জোন। সেখানে রোজ কমপক্ষে ১০টি করে বাস দাঁড়িয়ে থাকে। ছুটির দিনগুলোতে আরও বেড়ে যায় বাসের সংখ্যা।
অভিযোগ, পর্যটকেরা পার্কিং জোনকেই বানিয়ে ফেলেছেন পিকনিক করার জায়গা।
কখনও বাসের পিছনে গ্যাস ধরিয়ে, কখনও আবার হাওয়া আটকানোর জন্য মোটা ত্রিপল টাঙিয়ে মেলার মাঠেই চলছে রান্না। তারপর সেখানে বসেই চলছে খাওয়া-দাওয়ার পর্বও। এঁটো পাতাগুলো পর্যন্ত অনেকে ফেলে যাচ্ছেন সেখানেই। এতে আপত্তি তুলেছেন অনেকেই। বিশ্বভারতীর ছাত্রছাত্রী সহ অনেকের মতে, ‘‘পৌষমেলায় দূষণ নিয়ে যেখানে এত সচেতনতা। দূষণ আটকাতে বাজি পোড়ানোতেও
নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সেই মেলার মাঠ দিনের পর দিন পর্যটকেরা এ ভাবে নোংরা করে রাখবেন, এটা হতে পারে না।’’
একই অভিযোগ স্থানীয়দেরও। তাঁরা জানালেন, মেলার মাঠ থেকে কয়েক পা এগিয়ে গেলেই বিশ্বভারতীর ক্লাস হয়। সেখানে যদি রোজ রান্না-বান্না হয়, সেক্ষেত্রে পড়ার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে। স্থানীয়দের কথায়, ‘‘শান্তিনিকেতনে তো অনেক খাওয়ার জায়গা আছে। হোটেল, লজ, রেস্তোরাঁর পাশাপাশি ক্যান্টিনও রয়েছে। নিতান্তই যদি পর্যটকেরা শান্তিনিকেতন ঘোরার পাশাপাশি পিকনিকের আনন্দ পেতে রান্না করে খেতে চান, তা হলে তো শান্তিকেতন লাগোয়া আমার কুটির বা গোয়ালপাড়া রয়েছে। সেখানেই তো করা যেতে পারে।’’
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে পর্যটকদের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। কেউ কেউ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে ভাবার আশ্বাস দিয়েছেন। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অমিত হাজরা জানান, তাঁরাও বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন। ইতিমধ্যেই পার্কিং-এর দায়িত্বে থাকা আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলেছেন অমিতবাবু। খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। প্রয়োজন হলে পার্কিংয়ের দায়িত্বে অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। কত দিনে সেটা হয়, তারই অপেক্ষায় বোলপুর।