প্রস্তুতি: শহিদ বেদি চত্বরে আলপনা দিচ্ছেন পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র
প্রতি বছরের মতো এ বারও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিচ্ছে বিশ্বভারতী। বাংলাদেশ ভবন এবং ইন্দিরা ভবনে জোরকদমে অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। বিগত বেশ কিছু বছর ধরেই বিশ্বভারতী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্যাপন করে চলেছে। জাতীয় সংহতি কেন্দ্র এত দিন এই অনুষ্ঠানটি একক ভাবে আয়োজন করত। বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন হয়। গত বছর থেকেই জাতীয় সংহতি কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ ভবন যৌথ ভাবে ভাষা দিবস উদ্যাপনের আয়োজন করছে।
আয়োজকদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কাল, শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় আন্তর্জাতিক ছাত্রাবাস থেকে বাংলাদেশ ভবন পর্যন্ত একটি পদযাত্রার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হবে। পদযাত্রা শেষে বাংলাদেশ ভবনের শহিদ বেদিতে মাল্যদান করা হবে। শহিদ বেদি চত্বরে বুধবার রাত থেকেই আলপনা দিতে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের পড়ুয়াদের।
মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হবে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে। এ বছর মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের এবং বিভিন্ন ভাষাভাষী ছাত্রছাত্রীরা অংশগ্রহণ করতে চলেছেন। ১০টির বেশি ভাষায় অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে। রুশ, জার্মান, ইটালীয়, ফরাসির মতো বিদেশি ভাষা যেমন রয়েছে, তেমনই সাঁওতালি ভাষাও অনুষ্ঠানে স্থান পেয়েছে। আবার শ্রীলঙ্কা বা তিব্বতের ভাষাও থাকছে। তবে অনুষ্ঠানটি যেহেতু মাতৃভাষা দিবসের, স্বাভাবিক ভাবেই বিশ্বভারতীতে পাঠরত বাংলাদেশি ছাত্রছাত্রীদের পরিবেশনা এ বারও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে। ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণ করে প্রতি বছরই বিশ্বভারতীতে পাঠরত বাংলাদেশের পড়ুয়ারা মাতৃভাষা দিবস পালন করেন। এ বারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তাঁদের এ বারের পরিবেশনা ভাষা শহিদদের আত্মবলিদানের ইতিহাসকে সম্মান জানিয়ে তৈরি। তবে, তাঁরা জানিয়েছেন, ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধ পর্যন্ত সময়কালকে নাচ, গান ও আবৃত্তির মধ্য দিয়ে ধরে রাখবেন তাঁরা। সেই মতো মহড়াও চলছে।
বাংলাদেশ থেকে আসা অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র প্রত্যয় দাস বলেন, ‘‘প্রতিবারের মতো এ বারও আমাদের অনুষ্ঠানের মূল ভাবনা একুশে ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করেই। তবে তারই সঙ্গে বাংলা ভাষার হারিয়ে যাওয়া কিছু গান, যা ভাষা দিবসের সঙ্গে সংযুক্ত, সেগুলিকেও এ বার উপস্থাপিত করা হচ্ছে। তবে যেহেতু দিনটি শুধু বাংলাদেশের ভাষা শহিদ দিবস নয় বরং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, তাই স্বাভাবিক ভাবেই অন্যান্য ভাষাভাষী ছাত্রছাত্রীরাও তাঁদের মাতৃভাষাকে অনুষ্ঠানে প্রকাশ করবেন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘নিজের দেশের বাইরে এসে, নিজের দেশের সংস্কৃতিকে এ ভাবে উপস্থাপন করতে পেরে আমরা খুবই খুশি।’’