তৃণমূল থেকে কংগ্রেসে যোগদান। মুরারইয়ে। নিজস্ব চিত্র
গরু পাচার মামলায় তিহাড়ে জেলবন্দি জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। অনুব্রত-হীন জেলায় তৃণমূলের ভাঙন অব্যাহত। তিন দিন আগেই তৃণমূল নেতা কাজি নুরুল হুদা কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। রবিবার বোলপুর মহিদাপুর এলাকার তৃণমূলের বুথ সভাপতি জানারুল মল্লিক, শেখ সাহাজুল-সহ হাজার খানেক কর্মী তৃণমূল ছেড়ে বাম-কংগ্রেস জোটে যোগ দেন বলে জোটের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। অন্য দিকে, সিউড়ি ১ ব্লকের ভূরকুনা পঞ্চায়েত এলাকায় তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য-সহ বেশ কয়েক জন কর্মী তাঁদের দলে এসেছেন বলে দাবি করেছিল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। এ বার দল ছাড়লেন মুরারই ১ ব্লকের মহুরাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য আকবর শেখ।
রবিবার বিকেলে মুরারইয়ে কংগ্রেসের কার্যালয়ে দলীয় পতাকা হাতে তুলে নেন আকবর। সঙ্গে ছিলেন রাজগ্রাম পঞ্চায়েতের আম্ভূয়া গ্রামের সদস্যা সাবিনা খাতুনের ছেলে মহম্মদ মিনাজ-সহ গোড়াশা পঞ্চায়েতের কয়েক’শো তৃণমূল কর্মী। কংগ্রেসের দাবি, সাগরদিঘিতে কংগ্রেসের জয়লাভেই বোঝা গিয়েছে শাসক দলের সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কে ফাটল ধরেছে। তা ছাড়া দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের অভিযোগের জন্যও অনেকে তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
আকবর বলেন, ‘‘দশ বছর আমি মহুরাপুর পঞ্চায়েতের সদস্য। কংগ্রেসের টিকিটে জিতে বছর সাতেক আগে তৃণমূলে যোগ দিই। রতনপুর গ্রামের কয়েক জন তৃণমূল কর্মী গুরুত্ব না দেওয়ায় কংগ্রেসে ফিরে এলাম। কয়েক জন কর্মীর জন্য তৃণমূলের বদনাম হচ্ছে।’’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের মুরারই ১ ব্লক সভাপতি বিনয় ঘোষ। তিনি পাল্টা বলেন, ‘‘মহুরাপুর পঞ্চায়েতের কোনও সদস্য দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। আকবরই আবাস যোজনায় নামে গরিবদের থেকে টাকা তুলেছেন। একশো দিনের কাজে দুর্নীতির সঙ্গেও যুক্ত। এ নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। সে জন্য দলত্যাগ করেছেন। এতে তৃণমূলেরই ভোট বাড়বে।’’ যদিও আকবর ওই অভিযোগ মানেননি।
কংগ্রেসের রাজ্য প্রদেশ কমিটির সহ সভাপতি মাসকুল ইসলাম সিবলি ও জেলা কমিটির সহ সভাপতি মফিজুল শেখের দাবি, ‘‘তিনটি পঞ্চায়েতের কয়েক’শো তৃণমূল কর্মী কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। জেলায় তৃণমূল একটিও পঞ্চায়েত দখল করতে পারবে না। তৃণমূলের ধস নামা শুরু হয়েছে। পতন সময়ের অপেক্ষা।’’
তবে তৃণমূলের জেলা সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘যাদের কোনও সংগঠন নেই। তৃণমূল যাঁদের দুর্নীতির জন্য পঞ্চায়েতে টিকিট দেয়নি তাঁদের দলে ঢুকিয়ে ভাবছে পঞ্চায়েত দখল করবে। যে সব নেতা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের দল থেকে ছেঁটে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে।’’