Mobile Apps make life easier

অ্যাপেই শক্তির অপচয় রোধের দিশা পড়ুয়ার

অ্যাপের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় বন্ধ করার মডেল তৈরি করে ব্যক্তিগত বিভাগে সেরা হয়েছে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের একাদশ শ্রেণির ছাত্র নীলাব্জ সেনাপতি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:০৫
Share:

পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্র চত্বরে বিজ্ঞান মেলা। নিজস্ব চিত্র।

মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনে নানা সমস্যার সমাধান হাতে-কলমে করে দেখিয়ে নজর কাড়ল পুরুলিয়ার বেশ কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়ারা। পুরুলিয়া জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্র আয়োজিত জেলা বিজ্ঞান মেলায় এমনই কিছু ‘খুদে বিজ্ঞানী’-র উদ্ভাবনী ক্ষমতা সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে।

Advertisement

অ্যাপের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক শক্তির অপচয় বন্ধ করার মডেল তৈরি করে ব্যক্তিগত বিভাগে সেরা হয়েছে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের একাদশ শ্রেণির ছাত্র নীলাব্জ সেনাপতি।

নীলাব্জর কথায়, ‘‘বাড়িতে আলো-পাখা চালানো অবস্থায় অনেকেই তাড়াহুড়ো করে তালা দিয়ে বেরিয়ে যান। কিংবা বেরোনোর সময় লোডশেডিং থাকলে সব স্যুইচ বন্ধ করতেও অনেকে ভুলে যান। আমি মোবাইলে ফোনে একটি অ্যাপ তৈরি করেছি। যে অ্যাপের মাধ্যমে বাইরে থেকেও বাড়ির বৈদ্যুতিক সংযোগ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কাজেই বাইরে থেকেও ফোনের অ্যাপের সাহায্যে ফাঁকা বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ ছিন্ন করা সম্ভব হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের অপচয় রোধ করা যাবে।’’

Advertisement

নীলাব্জ ‘স্মার্ট ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট’ নামেও একটি মডেল তৈরি করেছে। ছাদের জলের ট্যাঙ্ক ভর্তি হয়ে গেলে ওই একই অ্যাপের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় ভাবে পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। আবার ট্যাঙ্কে জল তলানিতে চলে এলে পাম্প স্বয়ংক্রিয় ভাবে চলতে শুরু করে দেবে। নীলাব্জর কথায়, ‘‘এতে জলের অপচয় রোধ হবে।’’

একই বিভাগে দ্বিতীয় হয়েছে পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের দশম শ্রেণির পড়ুয়া চন্দন গরাঁই। ‘অ্যাডভান্স রোড সিকিউরিটি সিস্টেম’ নামে মডেলের মাধ্যমে চন্দন দেখিয়েছে প্রযুক্তি ব্যবহার করে কী ভাবে পথ দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা যেতে পারে।

দলগত বিভাগে সেরার পুরস্কার জিতেছে পুরুলিয়া অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চের একাদশ শ্রেণির অনুভব চট্টোপাধ্যায় ও অষ্টম শ্রেণির দেবরাজ রায়। তারা জানায়, বেশ কিছু দিন আগে পুরুলিয়ার একটি গ্রামে অসুস্থ বৃদ্ধা ও একটি শিশুকে বাড়িতে রেখে বাইরে গিয়েছিলেন শিশুটির বাবা-মা। ফিরে দেখেন, বৃদ্ধা মারা গিয়েছেন। ওই রকম ঘটনা রোধ করতে তারা তৈরি করেছে ‘পেশেন্ট হেলথ মনিটরিং সিস্টেম’। তারা দেখিয়েছে, পালস অক্সিমিটারে আঙুল দেওয়া থাকলে রোগীর জ্বর বাড়ছে কি না, তা বাইরে থেকেও মোবাইলের অ্যাপের মাধ্যমে নজর রাখা যাবে। পাশাপাশি, তারা একটি সার্কিট তৈরি করেছে, যেখানে হাত রাখলেও একই ভাবে জ্বর সম্পর্কিত বার্তা মোবাইলে পৌঁছে যাবে।

মেলা দেখতে এসে ওএনজিসি-র প্রাক্তন বিজ্ঞানী প্রফুল্লকুমার মাহাতো বলেন, ‘‘নীলাব্জর মডেল নজর কেড়েছে। অনেক পড়ুয়ার মডেলই বেশ ভাল। ছেলেমেয়েরা যে বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ নিয়ে গভীর ভাবনা-চিন্তা করছে, এই মেলাই তার প্রমাণ।’’

জেলা বিজ্ঞান কেন্দ্রের আধিকারিক ধ্রুবজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় জানান, ১৯৬৪ সাল থেকে তাঁরা বিজ্ঞান মেলা করে আসছেন। আগে জিলা স্কুল চত্বরে হত। ১৯৮২ সালে বিজ্ঞান কেন্দ্র তৈরি হওয়ার পরে এখানে হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘বিজ্ঞান কেন্দ্র তৈরির লক্ষ্যই ছিল পড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে কৌতূহল বাড়ানো। বিজ্ঞানে আগ্রহী করে তোলা। জেলার ২৮টি স্কুলের ১০৯ জন প্রতিযোগী ৮৮টি মডেল নিয়ে মেলায় যোগ দিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement