—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় ফের সিলিকোসিস রোগীদের সন্ধান পাওয়া গেল। মঙ্গলবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডিস্ট্রিক্ট সিলিকোসিস ডায়াগনোসিস বোর্ড এলাকার বিভিন্ন পাথর শিল্পাঞ্চল থেকে ৯০ জন সন্দেহজনক সিলিকোসিস-চিহ্নিত রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। তাঁদের মধ্যে ৬০ জনের প্রকৃত সিলিকোসিস রোগ ধরা পড়ে।
এর আগে গত বছর রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার অধীনে রামপুরহাট ১ ব্লকে ২৫ জন, নলহাটি ১ ব্লকে ১৪ জন ও মুরারই ১ ব্লকে ১০ জন অর্থাৎ সব মিলিয়ে মোট ৪৯ জন সিলিকোসিস আক্রান্ত রোগীর কথা জানা গিয়েছিল। এবারের পরীক্ষা মিলিয়ে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলায় মোট ১০৯ জন সিলিকোসিস রোগী চিহ্নিত হল।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যে সিলিকোসিস রোগ নির্ণয়ের পরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দফতর থেকে রোগীদের বিশেষ কার্ড দেওয়া হয়েছে। সেই কার্ডের মাধ্যমে শ্রম দফতরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ সিলিকোসিস সুরক্ষা ও নিয়ন্ত্রণ তহবিল থেকে সিলিকোসিস রোগীদের এককালীন ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছে। সিলিকোসিস আক্রান্ত কোনও রোগী মারা গেলে অতিরিক্ত ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহযোগিতা পরিবারকে দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। এ ছাড়া সেই পরিবারের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেবে শ্রম দফতর। সিলিকোসিস রোগীরা বিনামূল্যে চিকিৎসার সুযোগও পাবেন বলে স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা জানান। সম্প্রতি রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার দু’জন সিলিকোসিস রোগীকে শ্রম দফতর মাসিক পেনশন দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে তিনদিন ধরে রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুরারই ১, নলহাটি ১ ও রামপুরহাট ১ ব্লকের বিভিন্ন পাথর শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার শিবির করে ৯০ জন সন্দেহজনক সিলিকোসিস রোগীকে চিহ্নিত করে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে রামপুরহাট ১, নলহাটি ১ ও মুরারই ব্লকে সিলিকোসিস রোগী চিহ্নিতকরণ শিবিরের পরে তাঁদের রোগ নির্ণয়ের জন্য জেলাশাসক, স্বাস্থ্যভবনের যক্ষ্মা বিভাগের যুগ্ম স্বাস্থ্য অধিকর্তা, শ্রম দফতরের অধীন ডেপুটি ডাইরেক্টর অফ ফ্যাক্টরিস, শ্রম দফতরের অধীন ডেপুটি লেবার কমিশনার, রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বক্ষ রোগ বিশেষজ্ঞ ও রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার আধিকারিকদের নিয়ে বোর্ড গঠন করে এক লপ্তে ৬০ জনের সিলিকোসিস রোগ ধরা পড়ে। এঁদের মধ্যে ৬ জন মুরারই ১, ২৭ জন নলহাটি ১ ও ২৭ জন রামপুরহাট ১ ব্লকের বাসিন্দা।
রামপুরহাট স্বাস্থ্য জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অমিতাভ সাহা বলেন, “সিলিকোসিস রোগীদের চিহ্নিতকরণে স্বাস্থ্য জেলার অধীন রামপুরহাট ১, নলহাটি ১ এবং মুরারই ১ ব্লক এলাকায় পাথর শিল্পাঞ্চলের অবস্থানের জন্য ওই তিনটি এলাকাকেই বেছে নেওয়া হয়। পরবর্তীকালে চিহ্নিতকরণ শিবিরের পরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিহ্নিত ব্যক্তিদের জেলা সিলিকোসিস ডায়াগনোসিস বোর্ডের আধিকারিকদের সামনে উপস্থিত করা হয়। তাঁদের বুকের এক্সরে, থুথু পরীক্ষা-সহ আরও বিভিন্ন পরীক্ষা করে সিলিকোসিস রোগ ধরা পড়ে। ওই সমস্ত রোগীকে আগের মতো শ্রম দফতরের আওতায় বিভিন্ন আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।”