—প্রতীকী চিত্র।
সরকারি আবাস প্রাপকদের খসড়া তালিকা নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ নিষ্পত্তি করার লক্ষ্যে জেলায় গ্রামসভা শুরু হল বুধবার। নির্দিষ্ট সূচি মেনে জেলার ১৬৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত অর্ধেক পঞ্চায়েতে গ্রামসভা আয়োজিত হয়েছে এ দিন। আজ, বৃহস্পতিবার বাকি পঞ্চায়েতগুলিতে গ্রামসভা হবে। জেলা প্রশাসনের দাবি, এ দিন যে-সব পঞ্চায়েতে গ্রামসভার আয়োজন হয়েছিল, কোথাও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি বা সমস্যা ছিল না। পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।
তবে গ্রামসভাগুলি আয়োজন করার আগেই প্রতিটি ব্লকে খসড়া তালিকা নিয়ে যে-সব আপত্তি, অভিযোগ ও দাবি জমা পড়েছিল, সেগুলির নিষ্পত্তির পরে আরও একটি খসড়া তালিকা তৈরি হয়েছে। সেই তালিকায় বেশ কিছু যোগ্য বাড়ি প্রাপকের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, বাদও গিয়েছে বেশ কিছু নাম। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানান, পরের তালিকায় আরও দু’হাজার নাম যুক্ত হয়েছে।
গত ২৭ নভেম্বর রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো বীরভূমেও যোগ্য সরকারি আবাস প্রাপকদের খসড়া তালিকা প্রকাশিত হয়। সক্রিয় উপভোক্তা হিসাবে মোট ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৯৯ জনের নাম ছিল। সমীক্ষা শেষে যোগ্য প্রাপক হিসাবে ১ লক্ষ ১ হাজার জনের নাম খসড়া তালিকায় এসেছে। প্রায় ৩৯ হাজার জনের নাম বাদ গিয়েছে। কিন্তু, খসড়া তালিকা প্রকাশিত হতেই জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকা অভিযোগ উঠতে থাকে, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। অথচ পাকা বাড়ির মালিকদের নাম আছে। এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়ায়। পঞ্চায়েতে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বিরোধী দলগুলিও সরব হয়।
জেলা ও ব্লক প্রশাসন সূত্রে বলা হয়েছিল, জনসমক্ষে টাঙানো প্রথম খসড়া আবাসের তালিকা নিয়ে যদি কোনও আপত্তি উঠে আসে, তা তৎক্ষণাৎ মিটিয়ে দেওয়া হবে ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে। সেখানে কারও নাম বাদ গেলে সঙ্গত কারণেই বাদ যাবে। এর পরে যে নামগুলি তালিকায় থাকছে, সেগুলি নিয়ে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের গ্রামসভা হবে। সেখানে কোনও আপত্তি উঠে এলে তারও নিষ্পত্তি করা হবে।
সেই লক্ষ্যেই বুধবার থেকে শুরু হয়েছে গ্রামসভা। বিভিন্ন পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামসভাগুলিতে সংযোজিত খসড়া তালিকার পরেও নানা অভিযোগ এবং দাবি উঠে আসেছে। তেমনই একটি পঞ্চায়েত দুবরপাজপুরের চিনপাই। এ দিন পঞ্চায়েত ভবনেই বসেছিল সভা। জানা গিয়েছে, আবাসের সক্রিয় তালিকায় নাম ছিল। কিন্তু, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও সেই নাম কেন বাদ গিয়েছে, তা নিয়ে অভিযোগ করেন বেশ কয়েক জন।
চিনপাই পঞ্চয়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, আবাসের সক্রিয় তালিকায় ওই গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ৮৬৪ জনের নাম ছিল। ২৩৪ জনের নাম অযোগ্য এবং ১৩ জনের নাম নিষ্ক্রিয় ছিল বলে খসড়া তালিকায় বাদ গিয়েছিল। এ দিন গ্রামসভা শুরুর আগে ব্লক থেকে যে তালিকা পাঠানো হয়, সেখানে ২৩৪-এর পরিবর্তে ১৮৪ জনের নাম বাদ দেখাচ্ছে। পঞ্চায়েত প্রধান পিউ সাহা বলেন, ‘‘গ্রামসভায় দেখা যাচ্ছে, এখনও তালিকায় থাকা বেশ কয়েকটি যোগ্য নাম বাদ রয়েছে। কিছু নাম রয়েছে, যাঁরা যোগ্য নন। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্যণ করব।’’