বিধায়কের উপস্থিতিতে বিদ্যুতের মিটারে এল সংযোগ। নিজস্ব চিত্র tapasphoto09@gmail.com
দু’দশক পরে অবশেষে আলো জ্বলল সিউড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত পুরাতন লাইন পাড়ার ছ’টি বাড়িতে। রবিবার সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী এবং সিউড়ি থানার আইসি দেবাশিস ঘোষের উদ্যোগে পুলিশি নিরাপত্তায় বিদ্যুৎকর্মীরা বিদ্যুতের সংযোগ দিলেন ওই ছ’টি বাড়িতে।
ওই ছয়টি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই ২০ বছরেরও বেশি ধরে। বাড়ির বাসিন্দাদের অভিযোগ অনুযায়ী, একটি পরিবারের সদস্যদের আপত্তির কারণেই বিদ্যুতের খুঁটি বসাতে পারছিল না বিদ্যুৎ বিভাগ। যার ফলে এই প্রবল গরমেও বিদ্যুতের অভাবে ধুঁকতে হচ্ছিল তাদের। গত ৭ জুন বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে পাড়ার ভিতরেই রাস্তা অবরোধ করেছিলেন ওই ছয়টি বাড়ির বাসিন্দারা। পুলিশের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়ে তাঁরা অবরোধ তুলে নিলেও কোনও সমাধান হয়নি। এরপর গত শুক্রবার আবারও পথ অবরোধে শামিল হন তাঁরা। তবে এ বার পাড়ার ভিতরে নয়। মৌমাছি কালীবাড়ির সামনের প্রধান রাস্তাতেই বাঁশ বেঁধে অবরোধে শামিল হন বাসিন্দারা।
তাঁদের অভিযোগ ছিল, ৭ জুনের অবরোধের পর আপত্তিকারী পরিবারের সদস্যরা প্রশাসন ও জন প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে কোনও বাধা সৃষ্টি না করার অঙ্গীকার করে কাগজে স্বাক্ষর করলেও, বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা কাজ করতে এলে আবারও তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
বাধা পেয়ে সেদিনও সংযোগ না দিয়েই ফিরে যায় কর্মীরা। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পরে সেদিন সিউড়ি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধ ওঠায় এবং ওই পরিবারগুলিকে পুলিশি প্রহরায় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার আশ্বাস দেয়। সেই মতোই এদিন পুলিশি প্রহরায় ঘটনাস্থলে যান বিদ্যুৎ কর্মীরা। সব রকম আপত্তি অগ্রাহ্য করে শেষ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় ওই ছয়টি পরিবারকে। নিজে উপস্থিত থেকে ঘটনার তদারকি করেন বিধায়ক।
গোটা ঘটনায় স্বভাবতই অত্যন্ত খুশি পরিবারের সদস্যরা। তানিয়া খাতুন নামে এক সদস্য বলেন, “আমাদের আজ আনন্দের ভাষা নেই। আমাদের কুড়ি বছরের লড়াই এতদিনে এসে শেষ হল। বিধায়ক, আইসি ও বিদ্যুৎ দফতরের স্টেশন ম্যানেজারকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।” বিকাশ রায়চৌধুরী বলেন, “তৃণমূলের আমলে মানুষ অন্ধকারে থাকবে এটা হতে পারে না। এই পরিবারগুলোর সমস্যার কথা জানার পরেই আমরা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছিলাম। যাদের সঙ্গে সমস্যা তাদের সঙ্গেও কথা বলেছি। তারা এতদিনের লড়াই শেষে বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছেন, এটা আমাদের সকলের কাছেই খুব আনন্দের দিন।”