ধারে দাঁড়িয়ে টোটো। পথচারীদের হাঁটতে হচ্ছে রাস্তা দিয়েই। শুক্রবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে। নিজস্ব চিত্র।
আবার পর পর দুর্ঘটনা ঘটল ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। ফলে, আবার জাতীয় সড়কে যান নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রশ্ন উঠল বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
শুক্রবার সকালে জাতীয় সড়কে উপরে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল এক বৃদ্ধের। আর বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সড়কের উপরেই মল্লারপুর থানা এলাকায় একটি আশ্রমের কাছে শিলিগুড়িগামী একটি বেসরকারি বাসের সঙ্গে সিউড়িগামী একটি ধান বোঝাই লরির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত হলেন ১৬ জন।
এ দিন সকালে মুরারই থানার খানপুর গ্রাম থেকে স্ত্রীকে নিয়ে রামপুরহাট মেডিক্যালে ডাক্তার দেখাতে আসছিলেন আব্দুল মজিদ (৬৩)। রাস্তা পার হওয়ার সময়ে রামপুরহাট থেকে নলহাটিগামী একটি বালিবোঝাই ট্রাক তাঁকে ধাক্কা মারে বলে অভিযোগ। আব্দুলকে রামপুরহাট মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তিনি মৃত বলে জানান। পুলিশ বালিবোঝাই লরিটি আটক করেছে।
অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার রাতে বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষের পরে আহতদের উদ্ধারে হাত লাগান স্থানীয়েরা। আহতদের মধ্যে ১১ জনকে রামপুরহাট মেডিক্যালে পাঠানো হয়। বাকি পাঁচ জনকে ময়ূরেশ্বর ১ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পুলিশ জানায়, ধান বোঝাই লরিটি সামনে থাকা একটি গাড়িকে ওভারটেক করতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেসরকারি বাসটিতে ধাক্কা মারে। এ দিন হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, আহতদের সবাইকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ দিন আব্দুলের মৃত্যুর পরে তাঁর ছেলে সিরাজ আলি বলেন, ‘‘এখানে মেডিক্যাল কলেজ থাকায় অনেকেই রাস্তা পার করেন। কিন্তু এখানে যান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই।’’ স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাসপাতালের সামনে যত্রতত্র টোটো, মোটরচালিত ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকছে। ওষুধের দোকান, প্যাথোলজি সেন্টার, ব্যক্তিগত গাড়িগুলিও যত্রতত্র দাঁড়িয়ে থাকছে। রাস্তার পাশে পড়ে থাকছে ইমারতি দ্রব্যও। ঠিকমতো হাঁটাই যায় না। যানজটে জেরবার এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের সদর্থক পদক্ষেপ এবং নজরদারির অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের।
প্রশাসন সূত্রে খবর, একের পর এক দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসন মাস তিনেক আগে রামপুরহাট থানার মনসুবা মোড় থেকে নলহাটি থানার লোহাপুর কাঁটাগড়িয়া মোড় পর্যন্ত ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে ‘অবৈধ’ নির্মাণ চিহ্নিত করে নোটিস দিয়ে ভেঙে ফেলে। অভিযোগ, আবার রামপুরহাট মেডিক্যালের সামনের ফুটপাত দখল করে দোকান বসে গিয়েছে। হাসপাতালের সামনে মহকুমাশাসকের আদেশ নামা থাকা থাকলেও যত্রতত্র টোটো ও যন্ত্রচালিত ভ্যান দাঁড়িয়ে থাকছে বলে অভিযোগ।
রামপুরহাটের মহকুমাশাসক সৌরভ পাণ্ডে বলেন, ‘‘টোটো নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি পুরসভা দেখছে। হাসপাতালের সামনে যানজটের সমস্যা সমাধানে পুলিশকে বলা হয়েছে। হাসপাতাল এলাকা-সহ জাতীয় সড়কের উপরে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’