সেজে উঠেছে মুকুটমণিপুর। ছবি: সুশীল মাহালি
টলটল করছে কাকচক্ষু জল। ডিসেম্বরের গোড়া থেকেই পর্যটকদের অপেক্ষায় সেজে উঠেছে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর। তবে মাওবাদী নামাঙ্কিত কিছু পোস্টার কিছুদিন আগেই উদ্ধার হয়েছিল খাতড়ায়। সে কথা মাথায় রেখে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, ‘‘পর্যটন কেন্দ্রেই রয়েছে মুকুটমণিপুর ফাঁড়ি। পরেশনাথে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। এ ছাড়া, নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের ফোননম্বর দেওয়া থাকবে। পর্যটকদের নিরাপত্তা নিয়ে সব ধরনের ব্যবস্থা থাকবে।’’
দক্ষিণ বাঁকুড়া এক কালে ছিল মাওবাদী উপদ্রুত। ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পরে, পরিস্থিতির বদল হয় ক্রমশ। তার পরে বিশেষ কোনও অশান্তির খবর আর মেলেনি। তবে মাওবাদীদের এক সময়ের ‘মুক্তাঞ্চল’ সারেঙ্গায় সম্প্রতি কিছু পোস্টার উদ্ধার হয়েছে। তাতে সিপিআই (মাওবাদী)-এর নাম লেখা ছিল। রাজ্যের এবং কেন্দ্রের শাসকদলের বিরুদ্ধতা করে ‘সমাজের শিক্ষিত বঞ্চিত যুবক-যুবতীদের গণ আন্দোলনে’ যোগ দেওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছিল পোস্টারে।
জেলা পুলিশের অবশ্য দাবি, জঙ্গলমহলে পর্যাপ্ত নজরদারি রয়েছে। মাওবাদী গতিবিধির কোনও খবর পুলিশের কাছে নেই। ঘটনার পরে, তৃণমূল ও বিজেপি ওই পোস্টারগুলির পিছনে জড়িত থাকার অভিযোগ তুলেছিল পরস্পরের বিরুদ্ধে। তবে পর্যটনের মরসুমে নিরাপত্তায় খামতি রাখতে চাইছে না পুলিশ।
‘মুকুটমণিপুর হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সুদীপ সাহু, সহ-সভাপতি সঞ্জীব দত্তরা অবশ্য বলছেন, ‘‘ঘোর মাওবাদী আতঙ্কের সময়েও এই পর্যটন এলাকায় কোথাও উপদ্রব হয়নি। যা ঘটেছে, তা সব পর্যটনকেন্দ্র থেকে কম পক্ষে ৩০-৩৫ কিলোমিটার দূরে।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ হোটেল এবং লজে পুরো ডিসেম্বরের ‘বুকিং’ ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। এই মরসুমে ভাল ব্যবসা হবে বলে আশাবাদী তাঁরা।
‘মুকুটমণিপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি’র ভাইস চেয়ার পার্সন তথা রানিবাঁধের বিধায়ক জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘‘শিশুউদ্যান, জলাধারের ভিউ পয়েন্টে মুসাফিরানা পার্ক— সবেতেই নতুনের ছোঁয়া থাকছে এ বার।’’ তিনি জানান, নৌকা বিহারের জন্য লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ প্লাস্টিক বা থার্মোকল ব্যবহার। নিষিদ্ধ কোনও রকমের মাদক সেবন করা।