শ্রমণ পঞ্চশীল দত্ত। নিজস্ব চিত্র।
‘স্যাটেলাইট’ বহনে সক্ষম ক্ষুদ্রতম রকেটের মডেল বানিয়ে একটি আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মডেল প্রতিযোগিতায় পুরস্কৃত হয়েছে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির পড়ুয়া শ্রমণ পঞ্চশীল দত্ত। চলতি বছরের মে মাসে রাশিয়ায় ‘সেন্টার ফর মডেলিং দ্য ফিউচার’ নামের সংস্থা আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশন্যাল কম্পিটিশন অব্ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সায়েন্স ফিকশন ওয়ার্কস, হরাইজ়ন-২১০০’ নামের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে সে।
শ্রমণ পঞ্চশীলের কথায়, ‘‘আমার তৈরি মডেলের নাম ছিল ‘ওয়ার্ল্ডস স্মলেস্ট রকেট’। ছোট হওয়ার সঙ্গে এটি জ্বালানি সাশ্রয়কারী। পরিবেশবান্ধবও বটে। প্রতিযোগিতার ‘দ্য ফিউচার অফ সায়েন্স, ইনোভেশন অ্যান্ড নলেজ ম্যানেজমেন্ট’ বিভাগে মডেলটি পুরস্কৃত হয়েছে।’’
এর আগে গত বছরে চেন্নাইয়ে আয়োজিত ‘স্পেস কিডস ইন্ডিয়া’ আয়োজিত ‘ইয়ং সায়েন্টিস্টস ইন্ডিয়া’ শীর্ষক একটি প্রতিযোগিতাতেও গাড়ির মডেল পাঠিয়েছিল সে। সেটি চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছলেও পুরস্কৃত হয়নি। সেখান থেকে রকেটের মডেল তৈরির ভাবনা কী ভাবে মাথায় এল? শ্রমণ পঞ্চশীল জানায়, ওই প্রতিযোগিতায় এক জন একটি ছোট ‘স্যাটেলাইট’ তৈরি করেছিল। তা দেখেই ছোট রকেট তৈরির ভাবনা মাথায় আসে। ভবিষ্যতে মহাকাশ নিয়েই পড়াশোনা করার ইচ্ছে রয়েছে বলে জানায় সে।
উদ্যোক্তাদের তরফে শংসাপত্র ইতিমধ্যেই হাতে এসেছে। এ বারে প্রতিযোগিতার বিচারকদের মুখোমুখি হয়ে মডেল নিয়ে বিশদে জানাতে হবে। শ্রমণ পঞ্চশীলের কথায়, ‘‘একটু টেনশন হচ্ছে। তবে প্রতিযোগিতার বিচারকদের কাছে নিজের আবিষ্কারের কথা বলার জন্য মুখিয়ে রয়েছি। ‘ভার্চুয়াল’ মাধ্যমে কথাবার্তা হবে।’’
আদতে হুগলির তারকেশ্বরের বাসিন্দা শ্রমণ পঞ্চশীল পঞ্চম শ্রেণি থেকে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের ছাত্র। যখন সে প্রাথমিকের পড়ুয়া, বাবা মারা যান। মা শ্রীমাদেবী বলেন, ‘‘ছেলের সাফল্যে কোন মা না খুশি হয়! প্রার্থনা করি ও যেন মানুষ হতে পারে এবং সততার সঙ্গে মানুষের জন্য কাজ করতে পারে।’’
পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক স্বামী জ্ঞানরূপানন্দ বলেন, ‘‘বিজ্ঞানের প্রতি ছোটবেলা থেকেই ওর ঝোঁক। গত বছরে বিদ্যাপীঠের দ্বিবার্ষিক প্রদর্শনীতে শ্রমণ পঞ্চশীলের মডেল দেখে তামিলনাড়ুর নিউক্লিয়ার পাওয়ার বিভাগের প্রধান সন্দীপ সেন খুবই প্রশংসা করেছিলেন।’’