স্কুলে অভিযান কাউন্সিলরের

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে দুই পড়ুয়ার প্রাণ যাওয়ার পড়েই ধরা পড়েছিল স্কুলের বেহাল ছবিটা। কলকাতার ওই বেসরকারি স্কুলের মতো এমন কোনও পরিস্থিতি যাতে না আসে, তার জন্য নড়েচড়ে বসল সাঁইথিয়া পুরসভা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সাঁইথিয়া শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৬ ০১:০৮
Share:

মশা নিধনে নেমেছে সিউড়ি পুরসভা। (ইনসেটে) স্কুলে জমা জল দেখছেন সাঁইথিয়ার কাউন্সিলর গোপী চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।

ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে দুই পড়ুয়ার প্রাণ যাওয়ার পড়েই ধরা পড়েছিল স্কুলের বেহাল ছবিটা। কলকাতার ওই বেসরকারি স্কুলের মতো এমন কোনও পরিস্থিতি যাতে না আসে, তার জন্য নড়েচড়ে বসল সাঁইথিয়া পুরসভা। শুক্রবার সকালে শহরের দু’টি স্কুলে হানা দিলেন ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোপী চক্রবর্তী। স্কুলের কোথাও জমা জল বা আবর্জনা আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখলেন তিনি। এ দিনের অভিযানে দু’টি স্কুল চত্বরেই জল জমতে দেখা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে স্কুল দু’টি নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও। দুই স্কুল কর্তৃপক্ষই যদিও কাউন্সিলরের কাছে দাবি করেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই আছে। ঘাবড়ানোর কিছু নেই।

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ গোপী প্রথমে যান শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত সাঁইথিয়া হাইস্কুলে। ওই স্কুলে গিয়ে ক্লাসঘরগুলি থেকে সামান্য দূরেই স্কুলমাঠের শেষ প্রান্তে একটি চৌবাচ্চায় জমা জল দেখতে পান তিনি। তা দেখিয়ে গোপী প্রশ্ন করেন, ‘‘চৌবাচ্চায় জল জমে কেন?’’ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরুণকুমার দাস জবাবে দাবি করেন, ‘‘ওই চৌবাচ্চা থেকে প্রতিদিন বিকেলে গাছে ও খেলার মাঠে জল দেওয়া হয়। চৌবাচ্চায় জল মজুত রাখা হয় না। সকালবেলা চৌবাচ্চা ভরা হয়। বিকেলে খালি হয়ে যায়। তবু বর্তমান ডেঙ্গি পরিস্থিতি দেখে ওই চৌবাচ্চায় পর্যাপ্ত পরিমাণে নুন দেওয়া হয়েছে।’’ জবাবে সন্তুষ্ট হন কাউন্সিলর।

গোপী এর পরেই তাঁর ওয়ার্ডে থাকা আর একটি স্কুল শশিভূষণ দত্ত গার্লস স্কুলের দিকে পা বাড়ান। সেখানে গিয়েও দেখা যায়, পানীয় জলের কলের ব্যবহৃত জল স্কুল বিল্ডিং থেকে অল্প দূরে একটি চৌবাচ্চার মধ্যে পড়ছে। এ বারও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে এ ভাবে জল জমানোর কারণ জানতে চান কাউন্সিলর। প্রধান শিক্ষিকা উমা সরকারঘোষও দাবি করেন, স্কুলে জল জমানো হয় না। বিল্ডিংয়ের কাজ চলছে বলে ইট ভেজানোর জন্য চৌবাচ্চায় জল রাখা হয়েছে। তবে ডেঙ্গি হচ্ছে শোনার পর থেকে ওই জলে নুন দেওয়া হয়েছে বলে উমা জানান। দু’টি স্কুলেরই প্রধান শিক্ষকেরা আরও দাবি করেছেন, সাফাই কর্মীর অভাবে মাঝে মধ্যে স্কুলের কোথাও কোথাও আগাছা জন্মায়। তবে, অগাছা কেটে ফেলে স্কুলে ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন দাবি করলেও অভিযানের শেষে দু’টি স্কুলের অবস্থা দেখে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি গোপী। তিনি বলছেন, ‘‘দু’টি স্কুলই জমা জলে নুন ও স্কুল চত্বরে থাকা ঝোপঝাড়ে ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়েছেন। তবে, দু’টি স্কুলেরই নিকাশি ব্যবস্থায় ত্রুটি আছে। এ ব্যাপারে পুরসভার কোনও সাহায্যের প্রয়োজন হলে স্কুল কর্তৃপক্ষকে লিখিত ভাবে জানাতে বলেছি।’’ সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিপ্লব দত্তও। তিনি বলেন, ‘‘পুর এলাকার সমস্ত সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও সংস্থাকে ডেঙ্গি নিয়ে সতর্ক থাকতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কারও কোনও সমস্যা হলে পুরসভা সাহায্য করবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement