তখন শিল্পীর ঘরে প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র
ফি বছর বিদেশে পাড়ি দেয় বাংলার শিল্পীদের হাতে গড়া প্রচুর দুর্গাপ্রতিমা। এ বার বিদেশে পাড়ি দিল বাঁকুড়ার শিল্পীর তৈরি সরস্বতী প্রতিমাও।
পুজোর মরসুম প্রায় শেষ। তাই মাস দুয়েক পরে সরস্বতী পুজোর জন্য ‘কাউন্টডাউন’ শুরু করেছে বাঙলি। বাগদেবীর আরাধনায় এই রাজ্যের বাঙালিদের পাশাপাশি মেতে উঠবেন প্রবাসী বাঙালিরাও। ইংল্যান্ডের বার্মিংহামের কাছে লিমিংটন স্পা শহরের বাসিন্দা, পেশায় ইঞ্জিনিয়ার বাঁকুড়ার শুভদীপ চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এ বছর বাঁকুড়ার বড়পুকুর লেনের মৃৎশিল্পী তারকনাথ চঁন্দের হাতে গড়া সিমেন্টের তৈরি সরস্বতী প্রতিমা পাড়ি দিল সেখানে।
২৩ ইঞ্চি দীর্ঘ ও প্রায় ৯ কেজি ওজনের প্রতিমাটি নিয়ে সোমবার কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইংল্যান্ডে রওনা দেন শুভদীপ।
তার আগে শুভদীপ জানান, ২০১৮ সালে প্রবাসী ১০টি পরিবার মিলে তাঁরা স্থানীয় একটি কৃষ্ণমন্দিরে সরস্বতী পুজো শুরু করেন। সে দেশে মাটির প্রতিমা না পাওয়ায় কম্পিউটার থেকে সরস্বতী দেবীর ছবি বের করে তা নিয়েই তাঁরা পুজো শুরু করেন। কোভিড অতিমারির কারণে ২০২১ সালে পুজো বন্ধ রাখা হয়। ফের গত বছরে তাঁরা পুজো করেন।
তাঁর কথায়, ‘‘এ বছর দুর্গাপুজোয় বাঁকুড়ায় বাড়িতে এসেই মনস্থির করি, এখান থেকে সিমেন্টের সরস্বতী প্রতিমা নিয়ে গিয়ে পুজো করা হবে। সেই মতো সব বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে শিল্পীকে প্রতিমার বরাত দেওয়া হয়। এ বার লিমিংটন স্পা শহরে হলঘর ভাড়া করে আমরা বড় আকারে পুজো করব বলে ঠিক করেছি। সরস্বতী পুজোকে ঘিরে সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। ১০ থেকে এখন আমরা ২৪টি পরিবার মিলিত হয়েছি। তাই আগামী দিনে আমাদের লক্ষ্য দুর্গাপুজো করা।’’
শিল্পী তারকনাথ জানান, ছোটবেলা থেকে তাঁর বাবার কাছেই এই কাজে হাতেখড়ি হয়। তারপরে প্রচুর মাটি ও সিমেন্টের প্রতিমা এবং মন্দিরের গায়ে দেবদেবীর মূর্তি বানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওজন কমানোর জন্য রডের উপরে খড় বেঁধে তাঁর উপরে সিমেন্টের প্রলেপ দিয়ে প্রতিমা তৈরি করেছি। এই প্রথম আমার হাতে গড়া প্রতিমা বিদেশে যাওয়ায় খুশি পরিবারের সকলেই। আগামী দিনে বিদেশ থেকে বড় প্রতিমার বরাত পাওয়ার অপেক্ষায় রইলাম।’’