রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ছৌ শিল্পী সাধুচরণ মাহাতো। ছবি সংগৃহীত।
ভুবন কুমারের পরে এ বার সাধুচরণ মাহাতো। ছৌ শিল্পের হাত ধরে ফের পুরুলিয়ার মুকুটে জুড়ল নতুন পালক। পুরুলিয়ার বাঘমুণ্ডির কুশলডি গ্রামের ছৌশিল্পী সাধুচরণ মাহাতোকে বুধবার নয়া দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘সঙ্গীত নাটক আকাদেমি’ সম্মানে ভূষিত করেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু।
সম্মানে আপ্লুত বছর পঞ্চান্নর সাধুচরণের কথায়, “পুরুলিয়ার ছৌনাচ এখন বিশ্বের দরবারে সমাদৃত। সেই শিল্পকে বুক আগলে টিকিয়ে রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।”
শিল্পীর সম্মানিত হওয়ার খবরে সে দিন বিকেলের পরে থেকে কার্যত উৎসবের মেজাজ কুশলডি গ্রামে। বৃহস্পতিবার শিল্পী গ্রামে পৌঁছতেই উৎসব শুরু হয়ে যায় গ্রামে। পুরস্কার হাতে শিল্পীর সঙ্গে বাহারি আবির মেখে মাতোয়ারা হতে দেখা যায়
কচিকাঁচা থেকে বয়স্কদেরও। ছৌ শিল্পজগতের অনেকেই শিল্পীকে শুভেচ্ছা জানান।
অভাবী পরিবার থেকে উঠে আসা সাধুচরণের ছৌয়ের প্রতি টান কিশোর বয়স থেকে। শিল্পী জানান, ১৫ বছর বয়স থেকে আখড়ায় নাচ করেন। সংসারের বোঝা টানতে এক সময়ে দিনমজুরিও করতে হয়েছে। তিনি বলেন, “তবে অভাব কখনও নাচ রুখতে পারেনি”,
আনন্দের দিনেও চোখ চিকচিক করে ওঠে তাঁর। কয়েক বছর আগে নাচের সময়ে হাঁটুতে আঘাত পাওয়ার পরে থেকে আর সে ভাবে আর নাচা হয় না, আক্ষেপ শিল্পীর। বর্তমানে একটি ছৌ দল চালান তিনি।
গণেশের সাজে নাচতে বেশি পটু হলেও শিব-সহ আরও কয়েকটি ভূমিকায় নাচে অনায়াস দক্ষতা তাঁর, জানান তাঁর সমসাময়িক শিল্পীরা। ঝালদার খাটজুড়ি গ্রামের শিল্পী, প্রয়াত দুর্যোধন মাহাতোর ছেলে দিলীপ মাহাতো বলেন, “সাধুচরণের নাচে এক
অসামান্য দক্ষতা ফুটে ওঠে।” বাঘমুণ্ডির বাসিন্দা শিক্ষক রশিদ খানের কথায়, “এলাকার মান বাড়িয়েছেন শিল্পী। তাঁকে ও তাঁর শিল্পকলাকে কুর্নিশ জানাই।”
এর আগে গত বছরের গোড়ায় ‘সঙ্গীত নাটক আকাদেমি’ পুরস্কার পেয়েছিলেন কোটশিলার বামনিয়া গ্রামের ছৌ শিল্পী ভুবন কুমার। কিছু দিন পরে ওই
এলাকার ভগবানদাস কুমার ‘সঙ্গীত নাটক আকাদেমি অমৃত’ সম্মান পান।