হামের টিকা প্রদানে এগিয়ে গ্রামাঞ্চল। — ফাইল চিত্র।
হাম-রুবেলার প্রতিষেধক দেওয়ার গতিতে বাঁকুড়া জেলায় গ্রামগুলির তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর ও সোনামুখী পুরএলাকা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়া সদর ও খাতড়া মহকুমাকে নিয়ে তৈরি বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলায় ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রার ৭৪ শতাংশ প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, বিষ্ণুপুর মহকুমার ছ’টি ব্লক নিয়ে গঠিত বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার সাম্প্রতিকতম তথ্যে জানা যাচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার ৫৫ শতাংশের বেশি হাম-রুবেলা প্রতিষেধক দেওয়া হয়ে গিয়েছে।
প্রতিষেধক দেওয়ার নিরিখে বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার ব্লকগুলির মধ্যে সব চেয়ে আগে রয়েছে বাঁকুড়া ২ ব্লক (৯৫%)। তার পরেই রয়েছে জেলার শিল্পাঞ্চল ব্লক বড়জোড়া (৮৯%)। দক্ষিণ বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ও জঙ্গলমহলের সারেঙ্গা ব্লকে লক্ষমাত্রার ৮৭ শতাংশ প্রতিষেধক দেওয়া হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়া স্বাস্থ্যজেলার আওতায় থাকা বাকি তিনটি জঙ্গলমহল ব্লক বলে পরিচিত রানিবাঁধ, সিমলাপাল ও রাইপুরে যথাক্রমে ৬২ শতাংশ, ৬০ শতাংশ ও ৫৮ শতাংশ প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ হয়েছে। অন্যদিকে বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলায় সব চেয়ে এগিয়ে রয়েছে কোতুলপুর ব্লক (৭৮%)। তার পরেই, রয়েছে ইন্দাস (৬২%) ও সোনামুখী (৬০%) ব্লক।
তবে জেলার শহরাঞ্চলের ছবিটা ততটা উজ্জ্বল নয়। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী, বাঁকুড়া স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় থাকা বাঁকুড়া পুরশহরে লক্ষ্যমাত্রার ৫৩ শতাংশ প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। আর বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার আওতায় থাকা বিষ্ণুপুর পুর-শহরে ৪২ শতাংশ ও সোনামুখী পুরশহরে ৩৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে বলে সাম্প্রতিকতম তথ্যে জানা যাচ্ছে।
কেন এই পরিস্থিতি? বাঁকুড়ার ডেপুটি সিএমওএইচ (৩) সজল বিশ্বাস বলেন, “বাঁকুড়া স্বাস্থ্যজেলার ব্লকগুলির তুলনায় বাঁকুড়া পুরএলাকা প্রতিষেধক দেওয়ার গতিতে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে। আমরা পুরসভাকে গতি বাড়াতে বলেছি। এর জন প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য দফতর পুরসভাকে পরিকাঠামো দিয়েও সাহায্য করবে। গ্রামাঞ্চলগুলিতে বেশ গতিতেই কাজ হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রতিষেধক দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।”
বাঁকুড়ার পুরপ্রধান অলকা সেন মজুমদার বলেন, “কোথায়, কবে প্রতিষেধক দেওয়া হবে, রুটিন বানিয়ে সেই কাজ করা হচ্ছে। তার পরেও কেন গতি কম, খতিয়ে দেখব।”
বিষ্ণুপুর স্বাস্থ্য-জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিজয়প্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলেন, “শহরাঞ্চলে ধাপে ধাপে এগোনো হচ্ছে। শেষের দিকে গতি আরও বাড়বে।” তিনি যুক্ত করেন, স্কুলের শিবিরে প্রতিষেধক নিতে না পারা ছেলেমেয়েরা স্থানীয় উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়েও প্রতিষেধক নিতে পারে। প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ বেশ গতিতেই হচ্ছে।
সোনামুখীর পুরপ্রধান সন্তোষ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “শহরের হাই স্কুলগুলিতে টিকাকরণ না হলেও প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ঠিক গতিতে কাজ হচ্ছে।” নির্দিষ্ট সময়েই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে, দাবি বিষ্ণুপুরের পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামীরও। (শেষ)