মলয় মুখোপাধ্যায়ের শাসানী। ছবি সংগৃহীত।
রবিবার সাঁইথিয়া থানার সামনে এক বিক্ষোভে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন জড়ালেন বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ধ্রুব সাহা ও বীরভূম লোকসভার কনভেনার উত্তমকুমার রজক। বুধবার পাল্টা সভায় পুলিশ, প্রশাসন আইন না মেনে চাটুকারিতা করলে আধ ঘণ্টার মধ্যে সুন্দরবনে পাঠিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়। এ দিন বিকেলে তৃণমূলের ডাকে সাঁইথিয়া শহর চারতলা মোড়ে একটি বিক্ষোভ সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।
রবিবারের সভায় ধ্রুব পুলিশের বালি ব্যবসায় জড়িয়ে থাকার অভিযোগ করেন। ইডি নিয়েও হুঁশিয়ারি দেন ধ্রুব। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, শুধু বিজেপি কর্মীদের বেছে বেছে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সে দিন উত্তমকুমার ওসির বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগও তোলেন। তিনি বলেন, ‘‘ওসিরা সেখানে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে, তা হলে তাঁদের সেখানেই বেঁধে রাখুন। আর বলুন আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ছি। আমরা পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী দেব। আপনার হুমকির সঙ্গে আমরা কোনও রকম আপস করব না।’’
এ দিন পাল্টা মলয় বলেন, ‘‘আমরা লক্ষ্য করছি, কিছু প্রশাসনিক কর্তা, যার মধ্যে সাঁইথিয়া থানাও পরে, তাঁরা জানি না কোন শক্তির নির্দেশে বা কোন স্বপ্ন দেখে এখন থেকেই চাটুকারিতা শুরু করেছেন। আপনাদের পরিষ্কার হুঁশিয়ার করে দিতে চাই। যদি মনে করেন অনুব্রত মণ্ডল জেলের ভেতরে আছে বলে আপনাদের কেউ কিছু করতে পারবে না, তা হলে আপনারা ভুল করছেন। আধ ঘণ্টা লাগবে না আপনাকে এখান থেকে সুন্দরবনে পাঠিয়ে দিতে।’’
তবে সামনের পঞ্চায়েত ভোট নির্বিঘ্নে হবে বলেও আশ্বাস দেন মলয়। তিনি বলেন, ‘‘রোধী পক্ষকেও আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারাও আসুন নির্ভয়ে নির্বাচনে লড়াই করুন। আপনাদের পাশে আছি। লড়াই হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মসূচি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের উন্নয়নের নিরিখে।’’
এই সমাবেশে মলয় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন শহর সভাপতি দেবাশিস সাহা, বিধায়ক নীলাবতী সাহা, পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত-সহ তৃণমূল নেতা, কর্মীরা। দেবাশিস সাহাও প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘ওই দু’-চারটে বাঁদর এখানে এসে বড় বড় কথা বলে যাবে। সেটাতে সাঁইথিয়া থানার ওসি ভয় পেতে পারে। কিন্তু সাঁইথিয়ার মানুষ ভয় পায় না। ৩৪ বছর সিপিএমের সাথে লড়াই করেছি এবং অনেক কেসও খেয়েছি। কিন্তু তাঁরা থামাতে পারিনি। আর এই বিজেপি তো বাচ্চা ছেলে।’’
মলয় বলেন, ‘‘দু’দিন আগে এখানে বিজেপি থেকে এসে মিথ্যাচার করে গিয়েছে। তারই প্রতিবাদে আমাদের এই সভা।’’ পরে সুন্দরবন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করার জন্য যাঁদের পাঠানো হয়েছিল তাঁরা যদি তা না করেন তা হলে তাঁদের এখানে থাকার কোনও অধিকারই নেই।’’ বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘‘এলাকার মানুষ জানে আসলে কারা বাঁদর। বাঁদর যেমন ইশারায় নাচে, এলাকার মানুষ বুঝে গিয়েছে এখন সে ভাবে কারা নাচ করছে।’’
এ দিকে অনুব্রতর বিরুদ্ধে যিনি খুনের চেষ্টার অভিযোগ তুলেছেন, সেই শিবঠাকুর মণ্ডলের কাকু দীপক মণ্ডল এ দিন আবার অভিযোগ তুলেছেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে অনেকের থেকে টাকা নিয়েছেন শিবঠাকুর। তা থেকে বাঁচতেই তিনি পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যে অভিযোগ সাজিয়েছেন। শিবঠাকুরের পাল্টা দাবি, তাঁর কাকুই তাঁর থেকে টাকা নিয়েছেন। শিবঠাকুরকে নিেয় মলয় বলেন, ‘‘যে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে, সে তৃণমূল হতে পারে না।