বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বাসভবন থেকে বেরোনো মাত্র শুরু হয় চরম অশান্তি। —নিজস্ব চিত্র।
ছাত্র আন্দোলন ঘিরে চরম বিশৃঙ্খলা বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে। উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তাঁর বসভবন থেকে বেরোতে গিয়ে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ডেকে নেন নিরাপত্তারক্ষীদের। উপাচার্যকে ঘেরাওমুক্ত করতে গিয়ে এর পরেই পড়ুয়াদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন নিরাপত্তারক্ষীরা। মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় মারামারি, ধাক্কাধাক্কি এবং তুমুল হট্টগোলে অশান্ত হয়ে উঠল শান্তিনিকেতন। সেই সময়ে উপাচার্যের দিকে কয়েক জন আন্দোলনকারী চেয়ার ছোড়েন বলেও অভিযোগ। যদিও তাতে কেউ আহত হননি।
নিরাপত্তারক্ষীদের ঘেরাটোপে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল হলে যান উপাচার্য। কিন্তু সেখানেও একপ্রস্ত ঝামেলা হয়। বার বার ধাক্কাধাক্কিতে জড়িয়ে পড়েন পড়ুয়া এবং নিরাপত্তারক্ষীরা। আন্দোলনকারী এক পড়ুয়ার মন্তব্য, ‘‘প্রয়োজনে আমরণ অনশন করব। কিন্তু এই উপাচার্যকে না সরানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’’ যদিও ছাত্র আন্দোলন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, পড়ুয়াদের দাবিদাওয়া নিয়ে কোনও লিখিত আবেদন তাঁরা পাননি। তাই শুধু আলোচনার মাধ্যমে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না।
প্রসঙ্গত, প্রায় দিন কুড়ি ধরে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চালাচ্ছেন পড়ুয়াদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের দাবি, ‘‘বিশ্বভারতীর উপাচার্যের স্বৈরাচারী মনোভাবের জন্য তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে।’’ বিক্ষোভ ওঠাতে তৎপর হন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত কর্ম সচিব অশোক মাহাতো, জনসংযোগ আধিকারিক মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক অমিত হাজরা-সহ বিশ্বভারতীর সমস্ত বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাঁরা দাবি করেন, দীর্ঘ ২০ দিন ধরে উপাচার্য বাড়িতে আটকে থাকার কারণে বিশ্বভারতীর প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। সমাবর্তন অনুষ্ঠান-সহ বিশ্বভারতীর নানা ছোটখাটো অনুষ্ঠানও করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উপাচার্য বাড়ি থেকে না বেরোতে পারলে বিশ্বভারতীর এই অচল অবস্থাও কাটবে না।
এর পরেই মঙ্গলবার উপাচার্য তাঁর বাসভবন থেকে বেরোতে গেলে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। অশান্ত হয়ে ওঠে শান্তিনিকেতন।