বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা। —নিজস্ব চিত্র।
আবার উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার ওন্দার বিধায়ক তথা বিজেপির বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অমরনাথ শাখার বিরুদ্ধে। রবিবার বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের পুঞ্চা শিবতলা এলাকায় কলকাতার সমাবেশের প্রস্তুতি সভায় বিধায়কের মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সেখানে তৃণমূলের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে অমরনাথ বলেন, “কলকাতা যেতে বাধা দিলে টুঁটি ধরে প্রথমে গাড়ি বা বাসে তুলে নেবেন। তার পর কলকাতায় গিয়ে গঙ্গার জলে ভাল করে চোবাবেন।’’ তৃণমূলের দাবি, কলকাতার সমাবেশে লোক হবে না বুঝতে পেরে আগে থেকে বাধা দেওয়া হবে বলে প্রলাপ বকছেন বিজেপি বিধায়ক। অমরনাথের বিরুদ্ধে গন্ডগোলে উস্কানি দেওয়ারও অভিযোগ করেছে ঘাসফুল শিবির।
বস্তুত, আগেও অমরনাথের বিভিন্ন রাজনৈতিক মন্তব্যে বিতর্ক হয়েছে। এ বার আগামী ২৯ নভেম্বর কলকাতায় বিজেপির সভার প্রস্তুতি নিয়ে বিধায়কের মন্তব্যে শোরগোল রাজনৈতিক মহলে। রবিবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের পুঞ্চা শিবতলা এলাকায় ২৯ নভেম্বরের সমাবেশের প্রস্তুতি সভা করে বিজেপির যুব মোর্চা। সেই সভায় অমরনাথ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সভায় নিদান দেওয়ার ভঙ্গিতে অমরনাথ বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় শুনতে পাচ্ছি, ২৯ নভেম্বর সভায় যেতে আমাদের কোথাও কোথাও আটকানোর চেষ্টা করবে তৃণমূল। আমি আপনাদের বলছি, বাধা দিতে এলে বাস থেকে নেমে টুঁটি ধরে বাসে তুলবেন। আর কলকাতায় নিয়ে গিয়ে গঙ্গার জলে ভাল করে চুবিয়ে দেবেন।’’ শুধু তাই নয়, দলের কর্মীদের উদ্দেশে অমরনাথের বার্তা, ‘‘আপনার গালে একটা চড় মারলে আপনি চুপ না থেকে অন্য গালে এমন কামড়াবেন যেন একদলা মাংস উঠে আসে।’’
তাঁর এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে সভা শেষে বিধায়ক যুক্তি দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘গতবার যখন বিজেপি নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল, তখন বিভিন্ন স্টেশনে ট্রেন থেকে নামিয়ে আমাদের কর্মীদের মারধর করা হয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির বাস আটকে দিয়েছিল তৃণমূলীরা। সে দিনের ঘটনা আমরা ভুলে যাইনি। তাই এ দিন কোনও নিদান দেওয়া নয়, আমাদের কর্মীদের সচেতন করতেই ওই মন্তব্য করেছি।’’
বিজেপি বিধায়কের ওই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছে তৃণমূল। তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক তথা তৃণমূলের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরুপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার মানুষকে দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করেনি। এ রাজ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্প এবং আবাস প্রকল্পের টাকা আটকে রেখেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে রান্নার গ্যাসের দাম ক্রমশ বৃদ্ধি করে চলেছে। বছরে ২ কোটি বেকারের চাকরি দেব বলে একটিও দেয়নি। এই সব কারনে ২৯ নভেম্বর অমিত শাহের সভায় লোক যাবে না। তাই আগে থেকেই বিজেপি আটকানোর অজুহাত দেখিয়ে প্রলাপ বকছে।’’