অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
রাখিপূর্ণিমা উপলক্ষে সরকারি অফিস ছুটি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতেও আলো জ্বলছে বীরভূম জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কারের দফতরের অফিসে। শুধু তা-ই নয়, সূত্রের খবর, সমস্ত সরকারি আধিকারিকও ছিলেন অফিসে। কিন্তু ছুটির দিন এত রাতেও কী এমন জরুরি কাজ চলছে? তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর এ বার শুরু হল নয়া বিতর্ক।
বিরোধীদের অভিযোগ, এত দিন অনুব্রতের ‘পরিচালনা’ এবং ‘নির্দেশে’ প্রশাসনিক স্তরে যত বেনিয়ম কাজ হয়েছে, তার প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলছে। এবং তাতে যুক্ত হয়েছেন প্রশাসনেরই বড় অংশ। যদিও এই প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও।
গরুপাচার মামলায় বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত। আপাতত নিজাম প্যালেসে দফায় দফায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সিবিআই আধিকারিকরা। আগেই এই তৃণমূল নেতার নামে ৫৯টি ‘ডিড’-এর কাগজপত্র বিশেষ আদালতে জমা করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সিবিআই সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখন তাদের আতসকাচের তলায় অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ী রয়েছেন। অন্য দিকে, বৃহস্পতিবার বিকাল থেকেই জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক এবং কর্মীরা টানা কাজ করে চলেছেন। স্থানীয় সূত্রে খবর, অফিস খোলা ছিল রাত ২টো পর্যন্ত। ছুটির দিনেও অফিসে হাজির ছিলেন সমস্ত আধিকারিক। অফিসের বাইরে কর্তাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে ছিল। কী এমন দরকারি কাজ পড়ল ছুটির দিনে, এর উত্তর মেলেনি।
এ নিয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘এ সময় তো রাতের বেলাতেই কাজ হবে!’’ তাঁর দাবি, শুধু ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের অফিসই নয়, ব্লক ও ভূমি রাজস্ব দফতরও খোলা ছিল। সিপিএম নেতার মন্তব্য, “যে সব তৃণমূল নেতা চুরি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের কাগজপত্র সরানোর কাজ চলছে। আর প্রশাসন এখানে যে ভাবে শাসক দলকে সহযোগিতা করছে, তা সত্যিই লজ্জার।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার মন্তব্য, ‘‘অনুব্রতের গ্রেফতারির পর বেআইনি সম্পত্তির হদিস পাওয়া শুরু হলেই একের পর এক নেতা ফাঁসবেন। কয়েক জন আধিকারিক জড়িত আছেন। তাঁরাও ছাড় পাবেন না। তাই এই তোড়জোড়।’’