শুশুনিয়া পাহাড়ে শৈলারোহণ প্রতিযোগিতা। নিজস্ব চিত্র
সামনেই উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট। তা সত্ত্বেও মাল্টি-পিচ শৈলারোহণের জন্য কোনও মতে সঙ্গী জোগাড় করেছিলেন শ্যামনগরের মৃগণা ভট্টাচার্য। কিন্তু তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ বার উপায়! ‘‘দেশে এই শৈলারোহণ প্রতিযোগিতা প্রথম। যোগ দিতেই হবে।’’ রাস্তায় দেখা ডোমজুড়ের স্বরূপা মণ্ডলের সঙ্গে। দু’জনের মধ্যে বোঝাপড়াও বেশ ভাল। আর এর জোরেই দলটি পকেটে পুরে ফেলল প্রথম পুরস্কার।
রাজ্য যুবকল্যাণ দফতরের অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস বিভাগ এবং একটি বেসরকারি পবর্তারোহণের সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থার উদ্যোগে বাঁকুড়ার শুশুনিয়ায় আয়োজিত হয়েছিল ‘পার্টনারশিপ মাল্টি-পিচ ক্লাইম্বিং’ প্রতিযোগিতা। ২১-২৩ নভেম্বর পর্যন্ত এই শৈলারোহণ প্রতিযোগিতায় যোগ দিয়েছিলেন বাঁকুড়া, কোচবিহার, কলকাতা ছাড়াও বিহার এবং বাংলাদেশ থেকে আসা ২৮ জন।
এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী দেবরাজ দত্ত বলেন, ‘‘মাল্টি-পিচ পদ্ধতিটি সাধারণত কোনও অভিযান, জটিল বা উচ্চ পর্বতারোহণের আগে অভিযাত্রীদের শেখানো হয়।কিন্তু এ নিয়ে প্রতিযোগিতা দেশে এই প্রথম।’’ প্রতিযোগিতার অন্তত এক মাস আগে এ নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজনও করা হয়েছিল সল্টলেকে। এমনকি, প্রতিযোগিতা শুরুর আগের দিনও অভিজ্ঞ পবর্তারোহীরা প্রতিযোগীদের পদ্ধতিটি ভাল করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন। উদ্যোক্তারা জানান, এই শৈলারোহণ প্রতিযোগিতায় দু’জন আরোহীকে নিয়ে একটি দল তৈরি করা হয়। একটি ২৫ মিটার দড়ির মাধ্যমে প্রতিটি দলের দুই সদস্য অন্তত ৫০ মিটার উঁচু একটি পাহাড়ের এক দিক বেয়ে উঠতে পরস্পরকেসাহায্য করেন। এ ক্ষেত্রে দুই প্রতিযোগীর মধ্যে ভাল বোঝাপড়া এবং এই পদ্ধতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা থাকা প্রয়োজন।
দেবরাজ জানান, এই প্রতিযোগিতায় বিপদের আশঙ্কাও ছিল আর পাঁচটা প্রতিযোগিতার তুলনায় বেশি। তাই সুরক্ষা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছিল। বিচারক-সহ প্রতিযোগিতার একাধিক দায়িত্বে ছিলেন রাজ্যের অন্তত সাত এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী।
উদ্যোক্তাদের পক্ষে ডেভিড নস্কর বলেন, ‘‘ইদানীং বিভিন্ন অভিযানে গিয়ে দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে। এই পদ্ধতিটি জানা থাকলে কিছুটা পর্যন্ত বিপদ এড়ানো সম্ভব হবে। সচেতনতা বাড়াতেই এই প্রতিযোগিতার আয়োজন।’’